এফসিআর: ফিশ ফিড ফরমুলেশনের দক্ষতার একটি পরিমাপ

বিশেষ প্রতিবেদক: বাংলাদেশের মৎস্যখাত দীর্ঘদিন ধরেই দেশের অর্থনীতি, পুষ্টি এবং কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আধুনিক পদ্ধতিতে মাছচাষে অধিক উৎপাদনের লক্ষ্যে উন্নত ফিডের ব্যবহার এখন সময়ের দাবি। এই উন্নত ফিডের কার্যকারিতা মূল্যায়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক হচ্ছে খাদ্য রূপান্তর অনুপাত (Feed Conversion Ratio-FCR)।

এফসিআর হলো এমন একটি পরিমাপক যেটি নির্দেশ করে নির্দিষ্ট ওজনের মাছ উৎপাদনে ঠিক কতটুকু খাদ্য খরচ হয়েছে। সহজভাবে বললে, মাছের দেহে ১ কেজি ওজন বৃদ্ধির জন্য কত কেজি ফিড লেগেছে, সেটাই এফসিআর দ্বারা বোঝানো হয়। এই মান যত কম হবে, ফিড তত বেশি দক্ষ এবং উৎপাদন খরচ ততটাই কমবে।

এ বিষয়ে আর বি এগ্রো লিমিটেড (কেজিএস গ্রুপ)-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (ফিশ ফিড) সাইফি নাসির বলেন, “একটি কার্যকর এবং লাভজনক এফসিআর নির্ভর করে মূলত সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর:
১. বিনিয়োগ
২. ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা
৩. মাছের জিনগত বৈশিষ্ট্য
৪. বয়স এবং উৎপাদন পর্যায়
৫. স্বাস্থ্য অবস্থা
৬. খাদ্যের মান ও বৈশিষ্ট্য
৭. পরিবেশগত পরিস্থিতি।”

তিনি জানান, মাছ ছোট অবস্থায় তুলনামূলকভাবে কম ফিডে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে পারে, কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওজন বৃদ্ধির হার কমতে থাকে এবং সে অনুযায়ী ফিডের প্রয়োজন বাড়ে। ফলে এফসিআর-এর মানও বয়সভেদে পরিবর্তিত হয়।

এই কারণে, বিভিন্ন বয়সভিত্তিক আলাদা আলাদা এফসিআর হিসাব না করে পুরো উৎপাদন চক্রজুড়ে একটি গড় এফসিআর হিসাব করা অধিক যৌক্তিক ও ফলপ্রসূ। অভিজ্ঞ ফিশ নিউট্রিশনিস্টরা এই পদ্ধতিই সর্বোত্তম বলে মনে করেন। এতে সামগ্রিক কার্যকারিতা এবং লাভ-ক্ষতির বিশ্লেষণ সহজ হয়।

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফিড পাওয়া গেলেও চেরিশ ফিশ ফিড তার উন্নত ফর্মুলেশন, মানসম্পন্ন কাঁচামাল, ও বৈজ্ঞানিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টিগুণের মাধ্যমে মাছচাষিদের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য নাম হয়ে উঠেছে। চাষিরা মাঠপর্যায়ে এ ফিড ব্যবহার করে সন্তোষজনক ফলাফল পাচ্ছেন যেখানে এফসিআর থাকে নিয়ন্ত্রণে, মাছ থাকে সুস্থ, আর উৎপাদন হয় লাভজনক।

বাংলাদেশে মৎস্যখাতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে শুধু উন্নত ফিড নয়, সেই সঙ্গে চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ উপযোগী পরিকল্পনা, এবং সুস্থ মাছের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা। এসব কিছু সমন্বয় করে তবেই কাঙ্ক্ষিত এফসিআর অর্জন করা সম্ভব।