
এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক পরিচালিত মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত "মহিষ পালন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রযুক্তি, খামারি পর্যায়ে প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন কৌশল ও গবেষণা ব্যবস্থাপনা" শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন অদ্য ০৮/১২/২০২৫ খ্রি. তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। সকালে সাভারে বিএলআরআই এর প্রধান কার্যালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বিএলআরআই এর ট্রেনিং ডরমিটরিতে পবিত্র কুরআন হতে তেলোয়াতের মাধ্যমে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএলআরআই-এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক। আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএলআরআই এর পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. জিল্লুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয় পরিচিতি পর্ব। পরিচিতি পর্বের পরে আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও প্রযুক্তি পরীক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. ছাদেক আহমেদ।
স্বাগত বক্তব্যের পরে মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, চলমান গবেষণা, এ পর্যন্ত অর্জিত সাফল্য, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ইত্যাদি সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গৌতম কুমার দেব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব মহোদয় বলেন, দেশের আঠারো কোটি মানুষের খাদ্য যোগান দেওয়া এবং খাদ্য উৎপাদনের পিছনে গবেষক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি মানসম্মত উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথেও গবেষক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা যুক্ত। বিএলআরআই ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাজের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও সমন্বয় থাকতে হবে। গবেষণা করে যে সকল ফলাফল পাওয়া যাবে তা সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করবেন তাদের উচিৎ জনগণকে ঠিক মতো সেবা দেওয়া। পাশাপাশি গবেষকদের উচিৎ নিজেদের ব্যক্তিগত উন্নয়নের পরিবর্তে দেশের উপকারে আসবে, মানুষের উপকারে আসবে এমন বিষয়ে গবেষণা করা। এসময় তিনি বিএলআরআই এর গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএলআরআই এর মহাপরিচালক বলেন, বিএলআরআই ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর একসাথে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। বিএলআরআই মহিষ সংক্রান্ত অনেক জনপ্রিয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে, যা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে যাবে। পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায়ও অনেক কাজ হয়েছে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। দেশের দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গরুর পাশাপাশি আমাদের মহিষকেও গুরুত্ব দিতে হবে। মহিষ প্রতিকূল আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা করতে পারে বলে খামারিরা যাতে মহিষ পালনে উৎসাহী হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি এসময় তিনি নতুন জেগে ওঠা চর মহিষ খামারিদের বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে উদ্যোগ নিতে মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।
এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও প্রযুক্তি পরীক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. ছাদেক আহমেদ। আর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. গৌতম কুমার দেব।
মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী পরিচালিত এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় কর্মরত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপ-পরিচালক কৃত্রিম প্রজনন ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পর্যায়ের মোট ৩০ জন কর্মকর্তাকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বিএলআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত ও মাঠ পর্যায়ে বহুল ব্যবহৃত মহিষ পালন সংক্রান্ত জনপ্রিয় প্রযুক্তিসমূহ, খামারি পর্যায়ে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন কৌশল ও গবেষণা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ের উপরে এই প্রশিক্ষণ পরিচালিত হবে।
এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় হতে আগত প্রতিনিধিবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিএলআরআরআই এর বিভিন্ন বিভাগ/দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান ও দপ্তর প্রধান এবং প্রকল্প পরিচালকগণ।
মহিষ সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে দেশীয় মহিষের জাত সংরক্ষণ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিকল্পে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থায়নে ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়নে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট "মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন" শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। প্রারম্ভিকভাবে প্রকল্পের সময়কাল নির্ধারণ করা হয় জুলাই'২০২০ হতে জুন'২০২৫ পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদকাল জুন'২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
























