এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: কে.জি.এফ কর্তৃক পরিচালিত "Up-scaling of small-scale sheep rearing model for lamb production in Barind area"-প্রকল্পের আওয়তায় বিনামূল্যে ১৪জন খামারীকে ৫টি করে মোট ৭০টি ভেড়া বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নারিকেলবাড়ীয়া ক্যাম্পাসে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবীর, রাবি, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের সম্মানিত ডীন প্রফেসর ড. খন্দকার মো. মোজাফ্ফর হোসেন, প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও রাবি ভেটেরিনারী এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের প্রফেসর ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার, প্রফেসর ড. সৈয়দ সরওয়ার জাহান, প্রকল্পের গবেষক ও রাবি ভেটেরিনারি এন্ড এনিেেমল সায়েন্সেস বিভাগের ডেপুটি চীপ ভেটেরিনারি অফিসার ড. মো. হেমায়েতুল ইসলাম ।
ইতিপুর্বে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের তত্বাবধানে পরিচালিত "Validation of good practices of on-farm lamb production systems"-শীর্ষক একটি প্রকল্প খামার ভিত্তিক বরেন্দ্র অঞ্চলের দেশী ভেড়া পালনের মাধ্যমে প্রান্তিক খামারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ, নিরাপদ ভেড়ার মাংস (ল্যাম্ব মিট) সরবরাহের জন্য ২০১৭-২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছিল।
উদ্যোক্তাদের মাঝে ভেড়া পালনকে জনপ্রিয় করা, ভেড়ার মডেল কসাইখানা তৈরী, বরেন্দ্র অঞ্চলের ভেড়াকে স্বীকৃতি প্রদান; ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির আয় রোগজার বাড়ানো, ভেড়াকে ভেড়া হিসেবে পরিচয় করানো ছিল প্রকল্পটির মূল উদেশ্য। এছাড়া ভেড়ার মাংস যাতে ভোক্তারা ছাগল হিসেবে ক্রয় করে প্রতারিত না হন, ভেড়ার মাংস খাসী ও গরুর মাংসের চেয়ে স্বাস্থ্যের জন্য ভাল, ল্যাম্ব মিট এর প্রচলন করতে এ প্রকল্পটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
এরই ধারাবিকতায় পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের তত্বাবধানে ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে "Up-scaling of small-scale sheep rearing model for lamb production in Barind areaÓ Project code: TF 130-L/23 (dated, 07.05.2023)"- শীর্ষক প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।
রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী ও পবা ০২টি উপজেলায় বর্তমান প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে যার মোট খামারীর সংখ্যা ৪০জন। ইতোমধ্যে ৪০ জন খামারী নির্বাচিত করা হয়েছে। প্রকল্প হতে ৫টি ভেড়ার জন্য ঘর তৈরী (লম্বা ১০ফিট ও প্রস্থা ৮ফিট) বাবদ ৫০০০.০০ অনুদান দেওয়া হয়েছে। ভেড়া পালন ও নিরাপদ ল্যাম্ব মিট তৈরীর জন্য ০২দিনের ট্রেনিং প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি খামারী এককালীন ফ্রি অব কস্টে ৪টি ভেড়ী ও ১ পাঁঠা ভেড়া সরবরাহ করা হচ্ছে। ভেড়া পালনের জন্য বাংলায় লিখিত একটি বই প্রদান করা হয়েছে।
প্রকল্পের মাধ্যমে নিরাপদ উপায়ে ভেড়া প্রতি পালনে সহযোগিতা করা হবে। খামারীদের যে সব ভেড়ার বাচ্চা হবে, তা বড় করে বিক্রয়যোগ্য হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেড়ার কসাইখানায় সঠিক মূল্যে বিক্রয় করা যাবে। অথবা অন্য যে কোন জায়গায় বিক্রয় করতে পারবেন খামারীরা। তবে মূল ভেড়া বা প্রকল্প হতে সরবরাহকৃত ভেড়া বিক্রয় করতে পারবেন না।
প্রতিটি খামারীকে বছরে ১টি ভেড়ার বাড়ন্ত ভেড়ার বাচ্চা প্রকল্প এর কর্তৃপক্ষের নিকট ফেরত দিতে হবে। ফেরতকৃত বাচ্চা প্রকল্পের কর্তৃপক্ষ বরেন্দ্র এলাকায় পিছিয়ে পড়া গরীব-দু:খী খামারীদের মাঝে বিনামূলে বিতরণ করা হবে। প্রকল্পের ইতোমধ্যে ১০ জন খামারীকে মোট ৫০টি ভেড়া সরবরাহ করা হয়েছে।
উপস্থিত বক্তারা আরো জানান প্রকল্পটি শেষে উপকার পাওয়া যাবে: বরেন্দ্র অঞ্চলে মডেল ভেড়ার পাল তৈরী হবে। ভেড়ার প্রচলন বেড়ে যাবে। ল্যাম্ব মিট এর গুরুত্ব বেড়ে যাবে। লাভজনক ভেড়ার লালন-পালন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। আমিষ এর উৎপাদন বৃদ্ধি হবে। সুস্থ সবল জাতী গঠনে ভূমিকা রাখবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বাড়তি আয় হবে। নিরাপদ প্রোটিন উৎপাদন বৃদ্ধি হবে।