বাদল চন্দ্র সরকার: অতিরিক্ত সচিব মো. জাকির হোসেন শনিবার (৯ আগস্ট) বগুড়া জেলার সমসাময়িক কৃষি কার্যক্রমে নন্দীগ্রাম উপজেলার রনবাঘা ব্লকে আউশ ধানের মাঠ ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় করেন। মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ফসল উৎপাদনে ভালো বীজের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এটি ফসলের ফলন এবং গুণগতমান উভয়ই বৃদ্ধি করে।
ভালো বীজ ব্যবহারের ফলে উৎপাদন খরচ কমে এবং লাভ বাড়ে। ভালো বীজ উৎপাদন করে সঠিক নিয়মে সংরক্ষণ করে নিজেরা ব্যবহারের পাশপাশি অন্যান্য চাষীদের নিকট সরবরাহ করতে হবে। যাতে দেশের সামগ্রিক উৎপাদন বৃদ্ধি হয়। তিনি আরও বলেন, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার কৃষি ও জনজীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। এজন্য জমিতে জৈব্য সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। জৈব সার মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, যা মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা, বায়ু চলাচল, মাটিতে রাসায়নিক সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে, সারের পরিমাণ অপচয় কমায় এবং উর্বরতা বাড়ায়।
পরবর্তিতে তিনি একটি আইডিয়াল পুষ্টিবাগান পরিদর্শন করেন এবং প্রতিটি কৃষক পরিবারে একটি করে পুষ্টিবাগান তৈরীর জন্য গুরুত্বারোপ করেন। প্রয়োজনে এ জাতীয় কার্যক্রমগুলোকে নিয়ে বেশি বেশি করে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে।
নন্দীগ্রাম পৌরসভা ব্লকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলারদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, জমিতে সার ব্যবহারের প্রধান উপকারিতা হলো ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখা। কৃষি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ফলে জমির অম্লত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে পরবর্তীতে অনেক বেশি সার প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ছে। এজন্য মাটির গুনগতমান পরীক্ষা করে জমির অম্লতা অনুযায়ী তিন বছরে একবার শতাংশ প্রতি ৩-৪ কেজি হারে ডলোচুন ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দেন। এ থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য ডলোচুন এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি ডিলারদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, কোনোভাবে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে সার বিক্রি করা যাবে না। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিমাণমতো রাসায়নিক, জৈব ও জীবাণু সার ব্যবহারে কৃষকদের পরার্মশ প্রদানের প্রতি আহবান জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ সোহেল মো. শামসুদ্দীন ফিরোজ, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বগুড়া। সভায় কৃষি তথ্য সার্ভিসসহ মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা, নন্দীগ্রাম উপজেলার সকল বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার, খুচরা সার বিক্রেতা, সাংবাদিক এবং প্রগতিশীল কৃষক-কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন।