বাকৃ‌বি‌তে রেল অব‌রোধ ভোগা‌ন্তি, বাবা‌র জানাযায় হয়‌তো না শরীক হ‌য়েই বিদায় জানা‌তে হ‌বে

বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সময় পরিবর্তনের দাবিতে সকাল ১১টায় ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থীরা। এর ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রেল কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের রেল অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ করলেও তারা তা মান‌তে রাজি না।

শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের যৌক্তিক দাবি না মানা পর্যন্ত রেল অবরোধ চলমান থাকবে। কারও যদি বিশেষ প্রয়োজন হয়, তারা অন্য গাড়ি দিয়ে চলে যেতে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। কেউ কর্ণপাত করেনি। অবশেষে আমরা বাধ্য হয়েছি রেল অবরোধ করছি।

বিরক্তির সুরে ট্রেনযাত্রী মনোয়ার হোসেন বলেন, “আমার স্ত্রী প্রচণ্ড অসুস্থ। তাকে কোনোভাবেই অন্য গাড়িতে নেওয়া সম্ভব নয়। দুই ঘণ্টা যাবত ট্রেনে বসে আছি। যা অত্যন্ত বিরক্তিকর। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না দিতে পারলে তার অসুস্থতা আরও বাড়তে পারে।”

আরেক যাত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “গতকাল রাতে আমার বাবা মারা গেছেন। আজ বিকেলে জানাজা। সময়মতো বাড়িতে পৌঁছাতে না পারলে হয়তো বা শেষবার তাকে না দেখেই বিদায় জানাতে হ‌বে।”

ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুল আল হারুন বলেন, “ট্রেনের বহু যাত্রীর অভিযোগ পেয়েছি। কারও বাবা মারা গেছেন, কারও স্ত্রী অসুস্থ, কেউ চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে তারা নিঃসন্দেহে দুর্ভোগে পড়বেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রেল অবরোধ প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা করছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে এবং যাত্রীরাও তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।”

বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক জানান, “জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় , সে জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। কিন্তু তারা রেল অবরোধ প্রত্যাহার করতে রাজি নয়। আমরা বুঝিয়ে বলেছি, রেল অবরোধ ছাড়াও পিএসসির সঙ্গে আলোচনা করে সময় পরিবর্তনের উপায় আছে। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। আশা করি শিক্ষার্থীরা খুব দ্রুত রেল অবরোধ প্রত্যাহার করবে।”