মো: দেলোয়ার হোসেন : বর্ষা সিক্ত আষাঢ়ের স্নিগ্ধ পরিবেশে “দেশী ফল বেশী খাই, আসুন ফলের গাছ লাগাই” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৯-২১ জুন ২০২৫ পর্যন্ত নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হলো তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছিল ১৯ জুন বৃহস্পতিবার।
মেলার উদ্বোধন করেন নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, **“ফলই শক্তি, ফলই বল।** দেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন সময় পুষ্টি চাহিদা পূরণে দেশীয় ফল চাষে গুরুত্ব দেওয়ার। দেশীয় ফল শুধু পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নয়, সারা বছর ফল উৎপাদন নিশ্চিত করতেও এসব ফলের গুরুত্ব অনেক।”
তিনি আরও বলেন, “নওগাঁ বর্তমানে শুধু খাদ্যে নয়, ফল উৎপাদনেও অগ্রসর। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশে থেকে নওগাঁও আম উৎপাদনে বড় অবস্থানে এসেছে। কাঠাল, পেয়ারা, বেল, কলাসহ অনেক অপ্রচলিত কিন্তু পুষ্টিকর ফলের চাষ বাড়াতে হবে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বিপিএম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, “এই মেলার মাধ্যমে কৃষকসহ সব শ্রেণির মানুষ ফলের পুষ্টিগুণ ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় মেলাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার তার বক্তব্যে বলেন, “আবাদি জমিতে ফল গাছ না লাগিয়ে পতিত বা অনাবাদি জমিকে ব্যবহার করতে হবে, যাতে খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত না হয়।”
সমাপনী বক্তব্যে উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, “নওগাঁয় সবচেয়ে বেশি ফল চাষ হয় আমের, বিশেষ করে পোরশা, সাপাহার ও পত্নীতলা উপজেলায়। এ বছর জেলায় মোট ৩৫,৩০০ হেক্টর জমিতে ফল চাষ হয়েছিল, যা প্রতিবছরই বাড়ছে।”
মেলায় ৮টি স্টল স্থাপন করা হয়েছিল। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং কৃষক-কৃষাণীসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ মেলায় অংশগ্রহণ করেন।
৩ দিনব্যাপী এ ফল মেলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হলরুমে শেষ হয় ২১ জুন ২০২৫ শনিবার।