নাটোরে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা অনুষ্ঠিত : দেশীয় ফল চাষে উৎসাহিত করলেন জেলা প্রশাসক

মোছাঃ সুমনা আক্তারী: "দেশী ফল বেশি খাই, আসুন ফলের গাছ লাগাই” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নাটোরে অনুষ্ঠিত হলো তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা ২০২৫। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে গত ১৯ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নাটোর সদর উপজেলার উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করেন নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।

তিনি তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “জাতীয় ফল মেলার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় জনগণকে দেশীয় ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতন করা এবং চাষিদের দেশীয় ফলের বাগান করতে উৎসাহিত করা।”

তিনি আরও বলেন, “দেশীয় ফলের চাহিদা অনেক এবং এগুলোর চাষ পুষ্টি ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশীয় ফল পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, দামেও সাশ্রয়ী। এসব ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার যা নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাই শিশুদের মধ্যে দেশীয় ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। মেলার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে এবং ফল চাষেও আগ্রহ বেড়েছে।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আখতার জাহান সাথী, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) শামসুন্নাহার এবং আদর্শ ফলচাষি সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান।

মেলাকে কেন্দ্র করে নাটোরের উপজেলা পরিষদ চত্বর পরিণত হয় দেশীয় ফল ও ভেষজ উদ্ভিদের এক চমৎকার প্রদর্শনী কেন্দ্রে। মেলায় স্থাপিত ৭টি স্টলে প্রদর্শিত হয় আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, পেয়ারা, লেবু, দেশি আঙ্গুর, বেদানা, কামরাঙ্গা, মাল্টা, খেজুর, কাউফল, করমচা, ডেউয়া, আঁশফল, গাব, জগডুমুর, আতাফল, ডুমুর, চালতা, শরিফা, সাতকরা, লুকলুকিসহ বহু বিলুপ্তপ্রায় ও পুষ্টিকর দেশীয় ফল এবং ফল গাছের চারা।

এছাড়াও মেলায় বিক্রি হয়েছে রজেলা ও তুলসি চা, মধু, মাশরুম, বিভিন্ন ভেষজ গাছ ও ভেষজ পাউডার।

মেলার উদ্বোধন শেষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণ্যমান্য ব্যক্তি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি, কৃষক, কৃষি উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ মেলায় অংশগ্রহণ করেন।

মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা ছিল এবং ২১ জুন পর্যন্ত চলেছে।