বস্তায় আদা চাষের ওপর মাঠ দিবস ও কারিগরী আলোচনা অনুষ্ঠিত

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: ‘আবাদযোগ্য জমি কমে যাওয়ায় পতিত জমি বা বসতবাড়ির আশেপাশে, ফল বাগানে বস্তায় আদা চাষ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বস্তায় আদা চাষ করে পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে আমদানি ব্যয় কমানো সম্ভব।’ মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় গতকাল ২৩ জুন সোমবার বিকেলে রংপুর বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের আয়োজনে ও উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার উত্তর দলদলিয়া চতলারপাড়া গ্রামে বস্তায় আদা চাষের ওপর এক মাঠ দিবস ও কারিগরী আলোচনা অনুষ্ঠানে কৃষি বিশেষজ্ঞগণ এসব কথা বলেন।

মাঠ দিবসের কারিগরী আলোচনা পর্বে রংপুর বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবু সায়েম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) কুড়িগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. মামুনুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম জেলার অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুর রহমান, উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, দিন দিন ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির ফলে চাষযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে। বস্তায় আদা-হলুদ বা অন্যান্য ফসল চাষ একটি বিকল্প সমাধান। বস্তায় আদা চাষ আদার আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দিবে। আমাদের দেশে প্রায় ৩ কোটি ৫৫ লক্ষ বসতবাড়ি আছে। প্রতিটি বসতবাড়িতে যদি ১০টি করে বস্তায় আদা চাষ করা যায় এবং প্রতি বস্তায় গড়ে ১ কেজি আদা উৎপাদিত হয়, তাহলে দেশের মোট আদা চাহিদার ৮০ ভাগ পূরণ করা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। ফলে এ ধরণের প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা হলে কৃষি উন্নয়ন আরও ত্বরাণি¦ত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বস্তায় আদা চাষ প্রদর্শনী কৃষক নবিউল ইসলাম বলেন তিনি এ বছর প্রদর্শনী সহায়তা ৫শ বস্তা এবং নিজ উদ্যোগে আরও ২০ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন সবকিছু ঠিক থাকলে প্রায় ২০ হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।

হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবু সায়েম বলেন, দীর্ঘ জীবনকাল (প্রায় ৮ মাস) ও আদার রাইজোম পঁচা রোগ জমিতে দ্রæত ছড়িয়ে পড়ায় আদা চাষ কমে যাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে বস্তায় আদা চাষ একটি ক্লাইমেট স্মার্ট কার্যকর প্রযুক্তি। এ বছর মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় রংপুর বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টার কর্তৃক রংপুর অঞ্চলের রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগাম ও গাইবান্ধা অর্থাৎ ৫টি জেলায় ৬০টি প্রদর্শনীতে ৩০ হাজার বস্তায় আদা চাষ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন লাভজনক এ প্রযুক্তি দিয়ে শুধু আদা নয় পাশাপাশি হলুদ, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যেতে পারে। এছাড়া তিনি কারিগরী সেশনে উপস্থিত কৃষকদের বস্তায় আদা চাষের বিভিন্ন ধাপ জীবন্ত নমুনা দিয়ে উপস্থাপন করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে আমন্ত্রিত অতিথিসহ উপস্থিত কৃষকগণ বস্তায় আদা চাষের মাঠ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। মাঠ দিবসে পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় দুই শতাধিক কৃষক-কিষাণী উপস্থিত ছিলেন।