রোটারিয়ান ড. মো. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ:আজ ২৮ নভেম্বর থ্যাংকসগিভিং ডে (Thanksgiving Day) প্রধানত উত্তর আমেরিকায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়, পালিত একটি উৎসব। এটি সাধারণত পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে একত্রে সময় কাটানো, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং একটি ঐতিহ্যগত ভোজের মাধ্যমে উদযাপিত হয়। থ্যাংকসগিভিং ডে পালনের পেছনের কারণগুলো হলো:

Dr. Md. Mahfuz Alam:Rice stem borer infestation is a significant challenge for Aman rice farmers in Bangladesh, causing damage to yields in 2024. During the Aman season in 2024, the country, particularly the regions of Sirajganj, Bogura, Rangpur, Mymensingh, Kishoreganj, Habiganj, Moulvibazar, and Sylhet, experienced a severe stem borer infestation. This led to a significant reduction in rice production, threatening food security. The primary pests responsible for this infestation are the rice yellow stem borer (Scirpophaga incertulas) and the dark headed stem borer (Chilo suppressalis). These pests attack the rice plants, leading to symptoms like "dead hearts" (the central portion of the rice plant turning brown and dying) and "white heads" (where the plant fails to develop proper panicles). The infestations can substantially reduce both the quantity and quality of the harvest. It poses a significant threat to rice yield, particularly during the crop's vegetative and reproductive stages. In severely infested fields, damage caused by rice stem borers can result in yield losses of up to 44%. Weather conditions play a crucial role in influencing stem borer populations and outbreaks can often be predicted based on specific climatic patterns.

রোটারিয়ান ড. মো. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ
ভূমিকা:
এন্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (AMR) বর্তমান বিশ্বের একটি ভয়াবহ জনস্বাস্থ্য সমস্যা। অ্যান্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য এন্টি মাইক্রোবিয়াল ওষুধের অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে জীবাণুগুলি ক্রমশ এই ওষুধগুলোর প্রতিরোধ গড়ে তুলছে, যা ভবিষ্যতের চিকিৎসা ব্যবস্থা সংকটে ফেলতে পারে। প্রতি বছর ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর পালিত হয় বিশ্ব এন্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (AMR) সচেতনতা সপ্তাহ। ২০২৪ সালের এই সপ্তাহের থিম "Educate. Advocate. Act Now" এই সমস্যার বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বৈশ্বিক প্রচারণার আহ্বান জানায়।

সমীরণ বিশ্বাস: ডলোচুন হলো এক ধরনের সাদা পাউডার জাতীয় দ্রব্য। এটিকে ডলোচুন, ডলোঅক্সিচুন বা ডলোমাইট পাউডারও বলা হয়। ফসল উৎপাদনে হাজারো সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো মাটির তীব্র অম্লতা বা এসিডিটি সমস্যা। প্রতিনিয়ত অপরিকল্পিতভাবে রাসায়নিক সার ব্যবহারের মাধ্যমে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মাটির অম্লত্ব বা এসিডিটি। এই সমস্যায় থেকে উত্তরণের উপায় হলো জমিতে সুপারিশকৃত মাত্রা অনুসারে ডলোচুনের ব্যবহার।

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: পশুপ্রাণির বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ও লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এলআরআই)। এ লক্ষ্যে ১৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) শেকৃবি ও এলআরআই এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়।

ড. মোঃ মাহফুজ আলম ও খোন্দকার মোহাম্মদ আলমঃ তরমুজ একটি অত্যন্ত রসালো ও পুষ্টিকর জনপ্রিয় ফল। এ ফলের স্বাদ ও পুষ্টিমান অনন্য। এতে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমান ভিটামিন, মিনারেল ও এন্টি এন্টিঅক্সিডেন্ট। এতে ৯২% পানি থাকায় মরু অঞ্চলে এবং শুষ্ক মৌসুমে মানুষের পানির চাহিদা মেটাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

তরমুজ উৎপাদনে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে চীন যা বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৭০%। তরমুজ উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশগুলো হচ্ছে তুর্কি, ইরান, ব্রাজিল, উজবেকিস্তান, আলজেরিয়া, আমেরিকা, রাশিয়া, মিশর ও মেক্সিকো। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া তরমুজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। দেশের প্রায় সব এলাকাতেই তরমুজের এই ফসলটির চাষ হয়। চাষাবাদ পদ্ধতি সবজির মত হওয়ায় এবং সেচ কম লাগে বিধায় দেশের দক্ষিনাঞ্চলের কৃষকেরা বোরো মৌসুমে ধানের পরিবর্তে বানিজ্যিকভাবে তরমুজের চাষ করছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ পর্যন্ত ২০ এর অধিক তরমুজের রোগ সনাক্ত হয়েছে। রোগগুলো বিভিন্ন ধরনের জীবাণু যেমন ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও নেমাটোড দ্বারা হয়ে থাকে। এ রোগগুলোর মধ্যে গামি স্টেম ব্লাইট (Gummy Stem Blight) তরমুজের একটি মারাত্মক ছত্রাকজনিত রোগ, যা মূলত Didymella bryoniae ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট। এটি শুধুমাত্র তরমুজ নয়, বরং শসা, কুমড়া এবং মেলনের মতো অন্যান্য কুমড়া জাতীয় ফসলেও আক্রমণ করতে সক্ষম।

গামি স্টেম ব্লাইট রোগের অনুকূল পরিবেশে ৫০% পর্যন্ত ফসলের ক্ষতি সাধন করতে পারে। বিগত ২০১৯-২০২৩ বছরে কেজিএফ এর অর্থায়নে বিএআরসি ও বারি পরিচালিত গবেষণায় সারা বাংলাদেশে প্রধান তরমুজ উৎপাদনের জেলাগুলোতে যেমন, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, ভোলা, খুলনা, কক্সবাজার, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, নাটোর, পঞ্চগড় ও সিলেটে এ রোগের ব্যাপকতা ১০-৬০% পরিলক্ষিত হয়। সঠিক পরির্চযা ও সমন্বিত রোগ দমন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ রোগ দমন করে তরমুজের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব।

রোগের কারণ
গামি স্টেম ব্লাইট রোগের প্রধান কারণ হলো Didymella bryoniae নামক ছত্রাক। এই ছত্রাক মাটিতে, সংক্রমিত গাছের অংশ এবং বীজে লুকিয়ে থাকতে পারে এবং আক্রমণের উপযুক্ত পরিবেশ পেলে দ্রুত গাছের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। গামি স্টেম ব্লাইট রোগ বিস্তারের প্রধান কারণ গুলো হলো:

১. সংক্রমিত বীজ: অনেক সময় তরমুজের বীজে এই ছত্রাকের স্পোর লুকিয়ে থাকে এবং নতুন চাষের সময় এদের মাধ্যমে গাছ সংক্রমিত হয়।
২. আক্রান্ত গাছের অবশিষ্টাংশ: জমিতে আক্রান্ত গাছের অবশিষ্টাংশ জমে থাকলে তা পরবর্তী চাষে ছত্রাকের সংক্রমণের উৎস হয়ে ওঠে।
৩. আক্রান্ত মাটি: আক্রান্ত গাছের অবশিষ্টাংশ থেকে ছত্রাকের স্পোর মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং নতুন গাছের শিকড়ের মাধ্যমে গাছের মধ্যে প্রবেশ করে।
৪. বাতাস ও পানি: বৃষ্টির সময় পানির স্প্ল্যাশের মাধ্যমে এবং বাতাসে ছত্রাকের স্পোর উড়ে গাছের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে।

পরিচিতি
গামি স্টেম ব্লাইট রোগের লক্ষণ প্রধানত তরমুজ গাছের পাতা, কান্ড এবং ফলের উপর দেখা যায়। এই রোগের লক্ষণগুলো সাধারণত কাণ্ডের উপর শুরু হয় এবং গাছে গাম বা আঠালো পদার্থের নিঃসরণ ঘটে, যা রোগের নামের মূল উৎস। প্রথমদিকে আক্রান্ত স্থানে বাদামী বা কালো রঙের দাগ দেখা যায়, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে এবং কান্ডের উপরের অংশ শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত পাতায় প্রথমে ছোট ছোট বাদামী বা কালচে দাগ দেখা যায়, যা পরবর্তীতে বড় হয়ে পাতার অধিকাংশ অংশকে ঢেকে ফেলে এবং শুকিয়ে যায়। ফলে, সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয় এবং গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে।

ফল আক্রান্ত হলে দাগ দেখা যায় এবং ফলের গুণগত মান নষ্ট হয়। ছত্রাকটি বীজ, মাটিতে থাকা রোগের স্পোর, বা গাছের অন্যান্য অবশিষ্টাংশের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এছাড়া, আর্দ্র ও উষ্ণ আবহাওয়া এই রোগের বিস্তারকে ত্বরান্বিত করে এবং বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া এই রোগের জন্য অত্যন্ত অনুকূল।

রোগ বিস্তারের অনুকূল আবহাওয়া
তরমুজের গামি স্টেম ব্লাইট রোগ বিস্তারের জন্য কিছু নির্দিষ্ট আবহাওয়াগত শর্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া গামি স্টেম ব্লাইট রোগের সংক্রমণ ও বিস্তারকে বাড়িয়ে তোলে। এই রোগের বিস্তারের জন্য সহায়ক কিছু আবহাওয়াগত কারণ হলো:

১. উচ্চ আর্দ্রতা: গামি স্টেম ব্লাইট ছত্রাকের দ্রুত বৃদ্ধি এবং সংক্রমণের জন্য উচ্চ আর্দ্রতা অত্যন্ত সহায়ক। বৃষ্টির সময় এবং গাছের পাতা ও কান্ডে পানি জমে থাকলে ছত্রাক দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে।
২. মাঝারি থেকে উচ্চ তাপমাত্রা: ২৪-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গামি স্টেম ব্লাইট ছত্রাকের স্পোর সক্রিয় থাকে এবং সংক্রমণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
৩. বৃষ্টিপাত: টানা বৃষ্টিপাতের সময়ে গাছের পাতায় জমে থাকা পানি ছত্রাকের বিস্তারে সহায়ক। এই সময়ে পানির স্প্ল্যাশের মাধ্যমে ছত্রাকের স্পোর ছড়িয়ে পড়ে।
৪. সেচের অতিরিক্ততা: অতিরিক্ত সেচের ফলে জমিতে বেশি পানি জমে গেলে এবং গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে ছত্রাকের সংক্রমণ সহজ হয়। এ কারণে নিয়মিত সেচ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ক্ষতির প্রকৃতি
গামি স্টেম ব্লাইট রোগের প্রভাব তরমুজ গাছের বিভিন্ন অংশে দেখা যায়। এই রোগের কারণে গাছের বৃদ্ধির হার হ্রাস পায়, ফলের মান কমে যায় এবং ফসলের উৎপাদন কমে যায়। ক্ষতির প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিচে দেওয়া হলো:

১. পাতায় দাগ ও ক্ষতি: গামি স্টেম ব্লাইট রোগের কারণে গাছের পাতায় গোলাকার বা অনিয়মিত বাদামি দাগ দেখা যায় (চিত্র ১)। পাতাগুলি কালো বা হলুদ হয়ে ঝরে পড়তে শুরু করে এবং পাতার মাধ্যমে গাছের পুষ্টির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
২. কাণ্ডের ক্ষতি: রোগটি গাছের কান্ডের গোড়ায় ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে, যেখানে আঠালো পদার্থ নিঃসরণ হতে দেখা যায় (চিত্র ২)। কান্ডে কালচে দাগ পড়ে এবং ছত্রাক কাণ্ডের ভেতর প্রবেশ করে গাছকে দুর্বল করে ফেলে, যার ফলে গাছ ঢলে পড়তে শুরু করে।
৩. ফলের ক্ষতি: ফলের ওপর ছোট ছোট দাগ পড়তে দেখা যায় যা পরে বড় আকার ধারণ করে (চিত্র ৩)। ফলে গামি স্টেম ব্লাইট রোগের কারণে ফলের আকৃতি, স্বাদ এবং পুষ্টি মান কমে যায়, যা বাজারমূল্যে প্রভাব ফেলে।
৪. উৎপাদনশীলতার হ্রাস: গামি স্টেম ব্লাইট রোগে আক্রান্ত গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যায়। গাছের স্বাস্থ্য খারাপ হলে ফলন হ্রাস পায় এবং গাছের সার্বিক উৎপাদনশীলতা কমে যায়।
৫. অর্থনৈতিক প্রভাব: গামি স্টেম ব্লাইট বাংলাদেশের তরমুজ উৎপাদন খাতে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রোগের কারণে তরমুজের ফলন ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়, ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাছাড়া, ফলের গুণগত মান নষ্ট হওয়ায় বাজারে বিক্রি মূল্য কমে যায়, যা কৃষকদের জন্য দ্বিগুণ ক্ষতি সৃষ্টি করে।

দমন ব্যবস্থাপনা
গামি স্টেম ব্লাইট রোগ নিয়ন্ত্রণে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। এই পদক্ষেপগুলো গাছকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এবং রোগের বিস্তার রোধে সহায়ক।

১. শস্যাবর্তন (Crop Rotation)
ফসল চক্র বা ক্রপ রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে মাটিতে ছত্রাকের কার্যক্রম কমে যেতে পারে। একই জমিতে বারবার তরমুজ চাষ না করে অন্য ফসলের সাথে চক্র করে চাষ করা উচিত। এতে গামি স্টেম ব্লাইট ছত্রাকের বিস্তার সীমিত হয়।
২. প্রতিরোধী জাত নির্বাচন
গামি স্টেম ব্লাইট প্রতিরোধী জাতের তরমুজ চাষ করলে রোগের ঝুঁকি কম থাকে। প্রতিরোধী জাত ব্যবহারের মাধ্যমে গাছকে প্রাকৃতিকভাবে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়।
৩. মাটি শোধন
মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা ও ছত্রাকের উপস্থিতি কমানোর জন্য মাটিতে জৈব সার যোগ করা, শিকড়ের অংশ মাটিতে ফেলে না রাখা এবং জমি পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। জমিতে মাটি শোধন করে ছত্রাকনাশক মিশিয়ে দিলে রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব।
৪. সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনাসঠিক সেচ ব্যবস্থাপনা এই রোগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জমিতে পানি যাতে না জমে এবং সেচের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে সেচ দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করা উচিত। সেচের ফলে গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে ছত্রাক দ্রুত ছড়াতে পারে, তাই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।
৫. পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ:
চাষের সময় জমির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা উচিত। জমিতে পড়ে থাকা আগের ফসলের অবশিষ্টাংশ, পাতা বা শিকড় জমিতে রাখা উচিত নয়। জমি থেকে আগের চাষের সময়ের অবশিষ্টাংশ অপসারণ করা গামি স্টেম ব্লাইট ছত্রাকের বিস্তার রোধে কার্যকর হতে পারে।
৬. ছত্রাকনাশক
তরমুজের গামি স্টেম ব্লাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, এজক্সিস্ট্রোবিন ও ডাইফেনোকোনাজল, কপারভিত্তিক ছত্রাকনাশক বা ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ছত্রাকের বিস্তার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে ছত্রাকনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক মাত্রা ও নির্দেশনা মেনে চলা জরুরি।
৭. জৈবিক নিয়ন্ত্রণ (Biological Control)
মাটিতে Trichoderma spp., Bacillus subtilis এবং Pseudomonas florescense নামক উপকারী জীবাণু প্রয়োগ করে এ ছত্রাকের কার্যকলাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে জৈব সার যেমন ট্রাইকস্ট, বায়োর্ডামা ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মাটির পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি পায় এবং ছত্রাকের কার্যক্রম কমানো যায়।
৮. সমন্বিত ব্যবস্থাপনা (Integrated Management)
সমন্বিত ব্যবস্থাপনার জন্য প্রথমে বীজ শোধন করে শোধিত মাটির পলিব্যাগে বীজ বপন করে মশারির ভিতরে চারা উৎপাদন করতে হবে। জমির মাটিতে বারি সরিষা১শা এর তিন সপ্তাহ বয়সী দাড়া বায়ো ফিউমিগেশন করে নিতে হবে এবং বেড উঁচু ও উপযুক্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখতে হবে। মাদাতে জৈব ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করতে হবে, মালচ পেপার দিয়ে বেড ঢেকে দিতে হবে এবং শুধুমাত্র মাদা বরাবর ৪- ৬ সে.মি. ব্যাসের ছিদ্র করে নিতে হবে। মাঠে চারা রোপনের ১৫-২০ দিন পর জৈব বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে, পরিমিত সেচ দিতে হবে এবং রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই তাৎক্ষনিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

উপসংহার
গামি স্টেম ব্লাইট তরমুজ চাষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ যা তরমুজের উৎপাদনশীলতা এবং গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে। তরমুজ চাষে মরক রোগ একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হলেও সঠিক পরিচর্যা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই রোগের প্রভাব কমানো সম্ভব। কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক কৃষি পদ্ধতি অনুসরর এবং রোগ প্রতিরোধে জৈবিক ও রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সমন্বয় তরমুজ উৎপাদনে গামি স্টেম ব্লাইটের প্রভাব কমিয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি খাতকে আরও সুরক্ষিত করতে সহায়ক হবে।

লেখক পরিচিতিঃ ড. মোঃ মাহফুজ আলম, PSO,বিএআরসি, ঢাকা এবং
খোন্দকার মোহাম্মদ আলম, SO, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ, বারি, গাজীপুর।