পোল্ট্রির প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং গবেষণায় এক সাথে কাজ করবে বাকৃবি এবং ম্যাভেরিক ইনোভেশন

বাকৃবি সংবাদদাতা: শিক্ষা ও গবেষণায় সহযোগিতামূলক সম্পর্ক তৈরি করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি)-এর সাথে ম্যাভেরিক ইনোভেশনের এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ফলে বাকৃবি এবং ম্যাভেরিক ইনোভেশনের মধ্যে পোল্ট্রি গবেষণা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) এবং ম্যাভেরিক ইনোভেশনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া এসব কথা বলেন। সোমবার (৭ অক্টোবর) বেলা ১২টায় পশুপালন অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে ওই সমঝোতা স্মারকের আয়োজন করে পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগ।

ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া এসব কথা বলেন, “এই সমঝোতা স্মারক বাকৃবি এবং ম্যাভেরিক ইনোভেশনের মধ্যে গবেষণা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আমাদের পোল্ট্রি শিল্পের আধুনিকায়নে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সমঝোতা মাধ্যমে আমরা আরও কার্যকরী গবেষণা পরিচালনা করতে পারবো, যা আমাদের কৃষি ও পোল্ট্রি সেক্টরকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আমি আশা করছি, এই চুক্তি দুই প্রতিষ্ঠানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সুফল বয়ে আনবে এবং আমাদের গবেষক এবং শিক্ষার্থীরা এই সুযোগ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হবেন।” ম্যাভেরিক ইনোভেশনের দেখাদেখি আরো অনেক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে কৃষক বা খামারিরাই লাভবান হবে। তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পাবে।

উপাচার্য আরো বলেন, বাকৃবির গবেষণাগারে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ফলাফল মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করতে না পারলে দেশের কোনো লাভ হবে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জনগনের টাকায় পড়াশোনা করছে। এই টাকার সঠিক মূল্যায়ন তখনই হবে যখন শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জিত জ্ঞানকে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে ভ’মিকা রাখবে। একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা খুব সহজেই ওই সুযোগটি পেতে পারে।

পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বাপন দে’র সভাপতিত্বে সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক অধ্যাপক ড. সচ্ছিদান্দন দাস চৌধুরী,বাকৃবির ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ শহীদুল হক, পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো রুহুল আমিন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মো হাম্মাদুর রহমান, ম্যাভেরিক ইনোভেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ড. কবির চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুবাস চন্দ্র দাস।

সমঝোতা স্মারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন, বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম. হাম্মাদুর রহমান ও করেন পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বাপন দে এবং ম্যাভেরিক ইনোভেশনের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ম্যাভেরিক ইনোভেশনের সিইও ড. কবির চৌধুরী ও ওই কোম্পানির পোল্ট্রি ইনোভেশন বিভাগের প্রধান অংকন লাহিড়ী।

অধ্যাপক ড. সচ্ছিদান্দন দাস চৌধুরী বলেন, দেশের জন্য পশুপালন অনুষদের পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মূল কাজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দান করা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা। সম্পূর্ণ গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান না হয়েও বাকৃবির গবেষকেরা দেশের কল্যাণে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে। আজকে বাকৃবি ও ম্যাভেরিক ইনোভেশনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেশই প্রকৃতপক্ষে উপকৃত হবে। কারণ একত্রিত হয়ে কাজ করায় গবেষণার মান বৃদ্ধি পাবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও সমাদৃত হবে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাণীর উৎপাদনমুখী গবেষণাকে এগিয়ে রাখার কথাও জানান তিনি।

ড. কবির চৌধুরী বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাখাতে সামর্থ্য অনেক বেশি। তবে নলেজ শেয়ারিং, যৌথভাবে কাজ করলে আরো অনেক বেশি কিছু অর্জন সম্ভব। তিনি বাকৃবি উপাচার্য, পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থি সহ সকলকে এ ধরনের কাজে সুযোগ দেওয়ার জন্য ম্যাভেরিক ইনোভেশনের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

উল্লেখ্য, প্রাণী উৎপাদনের জন্য টেকসই প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য অত্যাধুনিক গবেষণা ও উদ্ভাবন প্ল্যাটফর্মে হিসেবে প্রতিষ্ঠা হবার লক্ষ্য নিয়ে ২০২০ সালে ম্যাভেরিক ইনোভেশন প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়।