
এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: উপকূলীয় অঞ্চলকে বনায়ন ও কৃষির জন্য সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকার সমস্যাগুলো দ্রুত জটিল হয়ে উঠছে এবং এসব সংকট মোকাবিলায় স্বল্পমেয়াদি ও মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শনিবার রাজধানীর বিজয় সরণিতে বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর মিলনায়তনে দুদিনব্যাপী জাতীয় উপকূল সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রতিদিন নতুন নতুন দুর্যোগ তৈরি হচ্ছে, প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃষিজমি বিনষ্ট হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে এবং বাড়ছে দারিদ্র্য ও পানি সংকট। এর ফলে জলবায়ু উদ্বাস্তু, মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ এবং কার্বন শোষণ হ্রাসের মতো সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, উপকূলের অনেক জায়গায় পূর্বের পরিকল্পনা বাতিল হলেও ক্ষয়ক্ষতি থেকে গেছে এবং চিংড়িঘের ভাঙতে আবারও কোটি টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে। বাস্তবতা হলো এই ক্ষতির দায় সরকারকেই নিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা যদি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের রক্ষা করতে না পারি, তাহলে নীতিগত অবস্থান অর্থহীন হয়ে যাবে। অথচ অনেক ক্ষেত্রে নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বিষয়গুলো অকারণে বিতর্কিত করা হচ্ছে।
তিনি সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন এলাকায় অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন অবকাঠামো, স্থানীয় নৌযান চলাচলে বাধা এবং জীবিকানির্ভর মানুষের আয় হারানোর বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, যারা এসব খাতের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন, তাদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করা জরুরি। সে লক্ষ্যে কোস্ট, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিকল্প জীবিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহায়তাও বিবেচনায় রয়েছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বিপুল জনগোষ্ঠী বসবাস করে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাস্তব রূপ নিলে এই জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্টে একটি আলাদা ও শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প নেই। পানি সম্পদ, নদী রক্ষা, পরিবহন ও কৃষি—সব খাতকে সমন্বিতভাবে বিবেচনা করতে হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় উপকূল সম্মেলনের আহ্বায়ক গওহার নঈম ওয়ারা। সঞ্চালনা করেন প্রাণের প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ, বন অধিদপ্তরের উপপ্রধান বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির, ঢাকাস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ডিপাক এলমার এবং কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী।
এই সম্মেলনে দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার কৃষি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, জেলে সম্প্রদায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা তিন শতাধিক প্রতিনিধি, গবেষক, শিক্ষার্থী ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অংশ নেন।
























