বাকৃবি প্রতিনিধি: গত ৫ আগস্টের পরে বদলে যেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আবাসিক হলের ডাইনিংগুলোর চিরচেনা চিত্র। ডাইনিংগুলোয় এখন আগের মত নেই জোর - জবরদস্তি, নিম্মমানের খাবার পরিবেশন। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হলের ডাইনিং সরেজমিনে পরিদর্শন করে এসব বিষয় জানা যায়।
"আগে ছাত্রলীগ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ডাইনিং এ খেতে জোর-জবরদস্তি করা হত, অনেকদিনের অগ্রিম টোকেন সংগ্রহ করতে হতো ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই ডাইনিং এ খেতে হত শিক্ষার্থীদের, ক্লাস -পরীক্ষার জন্য সময়মত খেতে না আসতে পারলেও টাকা কেটে নেয়া হত। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে।", জানান শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও সরেজমিনে ঘুরে আরো দেখা যায়, আশরাফুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আলম মিয়া স্বয়ং শিক্ষার্থীদের সাথে খাবার খাচ্ছেন এবং খাবারের মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এসময় ডাইনিং ম্যানেজার ও বাকৃবির স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো. সাইফুল্লাহ মাহমুদ বলেন, বর্তমানে ডাইনিং এ খেতে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যার যার ইচ্ছামত সকলে খেতে পারবে। কেউ যদি আগামীকাল খাবার খেতে চায় তাহলে আজ রাতের মধ্যে টোকেন সংগ্রহ করে নিতে হবে।টোকেন মূল্য দুপুরে ৫৫ টাকা এবং রাতে ৫০ টাকা। কেউ চাইলে একবেলা ও খেতে পারবে আবার দুইবেলাও খেতে পারবে। এখন অবধি ডাইনিং নিয়ে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসেনি, আশা করা যায়, ডাইনিং ভালোভাবেই আমরা ভবিষ্যতেও চালাতে পারবো।
বাকৃবির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জাকি মো. প্রমিজ বলেন, আমি ছয় মাস যাবত হলে আছি, শুরুর দিক থেকে আমি ডাইনিং এ খাই এবং তখন খাবারের মান খুবই বাজে ছিল। এখন হলের ডাইনিং এ আমরা ভাল খাবার পাচ্ছি। আগেরমতো বাজে খাবারগুলো দেয়া হয় না, খাবারের মান নিয়ে আমরা যথেষ্ট খুশি। মাছ-মাংসের পিস অনেক বড় দেওয়া হয়, এতে আমরা সবাই সন্তুষ্ট।
বাকৃবির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াদ বলেন, আজকে দুপুরের খাবারে ছিল ভাত, বড় সাইজের মুরগির মাংস ও আলু, সবজি এবং ডাল। খাবারের মান আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে, মাছ - মুরগির সাইজ ও বড় হয়েছে। তাছাড়া আমরা নিজ ইচ্ছানুযায়ী টোকেন কেটে খাবার খেতে পারছি। অনেকসময় পরীক্ষা থাকার কারণে বিভিন্ন হোটেলগুলোতে খেতে গেলে সময় অনেক নষ্ট হয়, দূরত্ব ও বেশি, খাবারের মান ও থাকে খারাপ, ডাইনিং থাকাতে আমাদের আর সে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতে হচ্ছে না।
এসময় আশরাফুল হক হলের প্রভোস্ট ড. মো. আলম মিয়া বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর দেখতে পাই হলের ডাইনিংটি বন্ধ, তখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে আমরা ডাইনিংটি চালু করি। এরপর থেকে বেশ কয়েকদিন আমি নিজে ডাইনিং এ ছাত্রদের সাথে বসে খাবার খেয়েছি এবং একইসাথে খাবারের মান ও যাচাই করে থাকি। বিশেষ করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ আপোষহীন। ডাইনিং এর খাবারের মান আরো উন্নয়ন করতে আমরা কাজ করবো।