র‌্যাগিং মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতি শেকৃবি উপাচার্যের

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: র‌্যাগিং, মাদক, গণরুম ও সেশনজটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন রাজধানীর শেবোংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) সদ্য ভর্তি হওয়া ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে নবীন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক মত বিনিময় সভায় তাঁরা এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল লতিফ শেকৃবিকে শতভাগ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় দাবি করে প্রতিষ্ঠানটিকে সম্পূর্ণরূপে র‌্যাগিং, মাদক, গণরুম ও সেশনজটমুক্ত করার প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেন।

মত বিনিময় সভায় এক অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে ভার্তি ক্যান্সেল করে শেকৃবিতে ভর্তি হয়েছে শুধু র‌্যাগিংমুক্ত পরিবেশের প্রত্যাশায়। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এ ক্যাম্পাসে র‌্যাগিংয়ের কালচার নেই, গণরুম তুলে দেওয়া হয়েছে। আশা করি এটা অব্যহত থাকবে। আরেক অভিভাবক নিজেকে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার মেয়ে ভর্তি পরীক্ষার মেধাক্রমে প্রথম সারিতে স্থান করে নিয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থান, শতভাগ আবাসন সুবিধা ও নিরাপত্তা বিবেচনায় তাঁর প্রথম পছন্দ শেকৃবি। তবে সেশনজট কমানোর প্রতি তাগিদ দেন এ অভিভাবক। এছাড়াও অন্যান্য অভিভাবকবৃন্দ আবাসিক হলে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও জরুরী প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

সভায় আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে শেকৃবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ইমরান খান বলেন, বর্তমান প্রশাসন পূর্বের যেকোন প্রশাসনের তুলনায় স্টুডেন্ট ফ্রেন্ডলি। ক্যাম্পাসে র‌্যাগিংয়ের কালচার আর নেই। বর্তমানে দেশের অন্য যেকোন ক্যাম্পাসের তুলনায় শেকৃবি’র পরিবেশ ভালো। তারপরও কোন শিক্ষার্থী র‌্যাগিংয়ের শিকার হলে সাংবাদিকদের জানালে সহযোগিতা করা হবে। সমন্বয়ক তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, এ ক্যাম্পাসে আর কখনো র‌্যাগিং, গণরুম ফিরে আসতে দিব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আরফান আলী বলেন, আপনাদের সন্তানকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা দিবেন না। অতিরিক্ত টাকা তাদের নষ্টের কারন হতে পারে। এনিম্যাল সায়েন্স ও ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা আপনাদের সন্তানদের সেকেন্ড গার্ডিয়ান। তবে সব দায়িত্ব আমাদের উপর ছেড়ে না দিয়ে তাদের রেগুলার মনিটরিং করবেন। এটা টেকনিক্যাল ভার্সিটি হওয়ায় জেনারেল ভার্সিটির তুলনায় পড়াশোনার চাপ বেশি।

ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাঃ আশাবুল হক বলেন, প্রথম সেমিস্টার যেন খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করে সে বিষয়ে আপনাদের সন্তানদের মোটিভেট করবেন। প্রথম সেমিস্টারে ফলাফল ভালো করলে সেটা ধরে রাখার একটা তাগাদা অনুভব করে শিক্ষার্থীরা। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের ডিন অধ্যাপক ড. এম সালাউদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সারা জাতি বিগত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়েছে। তবে সারা দেশের মতো এ বিশ্ববিদ্যালয়ও এখন র‌্যাগিং মুক্ত। তবে এটা যেন ফিরে না আসে সে জন্য ভিসি মহোদয়কে পরামর্শ দিব যেন ‘এন্টি র‌্যাগিং টিম’ গঠন করা হয়।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, সন্তানদেরকে মাদক ও খারাপ সঙ্গ থেকে দূরে থাকতে বলবেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, আবাসিক হলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ইউএসআইডি’র সহযোগিতায় ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। আমরা গ্লোবাল গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল লতিফ বলেন, শেকৃবিতে শতভাগ আবাসিক সুবিধা রয়েছে। খাবারের মান আগের চেয়ে ভালো করা হয়েছে। প্রতিটি হলের লাইব্রেরিতে উচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। চার বছরের মধ্যে যেন স্নাতক সম্পন্ন হয় সেভাবে আমরা পরিকল্পনা প্রণয়ন করব। অ্যান্টি র‌্যাগিং টিম গঠন করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণরূপে র‌্যাগিং, মাদক, গণরুম ও সেশনজটমুক্ত করা হবে। আমরা আপনাদের প্রত্যাশা পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।