সমীরণ বিশ্বাসঃগাছের ফুল-ফল ঝরা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও কখনও কখনও পরিবেশগত, পুষ্টিগত বা রোগের কারণে অতিরিক্ত ঝরা হতে পারে। এটি গাছের ফলন কমিয়ে দিতে পারে এবং কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
গাছে ফুল আনতে গাছের পরিচর্যা :
১. গাছের গোড়ার মাটিকে অতিরিক্ত শুকিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।
২. ফুল আসার সময় হলে, নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার প্রয়োগ করা যাবে না।
৩. এইসময় পটশ জাতীয় সার প্রয়োগ করতে হবে।
৪. গাছে ফ্লোরা ব্যাবহার করবেন।
৫. এছাড়া সম্ভব হলে, অনুখাদ্য ব্যাবহার করবেন।
গাছের ফুল-ফল ঝরে পড়ার কারন:
১. পরাগায়নের সময় কোনকিছু স্প্রে করা যাবে না।
২. দিনের তাপমাত্রা 30° সেলসিয়াসের বেশি হলেও ফুল ঝরে যেতে পারে।
৩. আবার রাতে 16° সেলসিয়াসের নিচে হলেও সমস্যা।
৪. বোরন সারের ঘাটতি হলেও ফুল ঝরে যাবে।
৫. ছত্রাকের আক্রমন হলে ফুল ঝরে যাবে।
৬. এছাড়া অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, তীব্র বাতাস বা ঝড়, পোকার আক্রমন, পুষ্টির অভাব, গোড়ায় জল জমে থাকা, সঠিক পরাগায়ন না হলে, গাছের ফুল ঝরে পড়ে যায়।
সমাধানের উপায়:
১. অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের পরও যেন গাছের গোড়ায় জল না জমে, সেদিকে নজর দিতে হবে।
২. গাছের পুষ্টির অভাব দূর করতে, প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করতে হবে।
৩. পোকার আক্রমন হলে, আগাম ব্যাবস্থা ও পরবর্তী ব্যবস্থাপনা নিতে হবে।
৪. পরাগায়নের সময় কোনো কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবে না।
৫. এই সময় জিব্বেরেলিক অ্যাসিড ব্যাবহার করতে পারেন।
৬. অল্প প্রয়োজনীয়তা হলেও, বোরন সার ব্যাবহার করতে হবে।
৭. অতিরিক্ত গরমে পানি স্প্রে করা।
৮. প্রয়োজন হলে ছায়ার ব্যবস্থা করা।
৯. প্রয়োজনীয় পরাগায়নের জন্য মৌমাছি আকৃষ্ট করা।
ফুল ও ফল ঝরা কমাতে নিয়মিত পরিচর্যা ও বৈজ্ঞানিক উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফলন বৃদ্ধি পাবে এবং গাছ সুস্থ থাকবে।
লেখক: কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ , ঢাকা।