জেসমিন সুলতানা পারু: বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেলেও তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ ক্রমাগতই হ্রাস পাচ্ছে। একটা সময় নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে যে কোন নির্যাতন ঘটলে নারী অধিকার, মানবাধিকার সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হতো।
কালের বিবর্তনে সেই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের আওয়াজ হারিয়ে যাচ্ছে। দেশব্যাপী নানা মানবাধিকার, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও বেসরকারী অনেক সংগঠন থাকলেও তারাও একাজে আগের মতো এগিয়ে আসছে না। যার কারনে নির্যাতিতরা কোন সরকারি-বেসরকারি আইনগত সহযোগিতা ও সামাজিক সমর্থন পাচ্ছে না। ফলে সহিংসতার শিকার নারীরা মানসিক স্বাস্থ্য, মর্যাদা, নিরাপত্তাহীনতা এবং সর্বোপরি তাদের অধিকার নিয়ে শংকিত। অনেক ক্ষেত্রে তারা গুরুতর প্রজননস্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া সহিংসতার কারণে অনেক নারীর অকাল মৃত্যুবরণে বাধ্য হচ্ছেন। নারী ও অল্পবয়সী মেয়েদের ওপর নিপীড়নের অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহের কারণে বিশ্বব্যাপী বিপুল সংখ্যক কন্যাশিশুর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়।
তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চট্টগ্রামের কর্মরত বেসরকারী নারী অধিকার সংগঠনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেখানে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম নামে একটি সংগঠন তৈরীর ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
১৫ জুলাই ২০২৪ চট্টগ্রামের কারিতাস মিলনায়তনে চট্টগ্রামে কর্মরত নারী অধিকার সংগঠনগুলোর এক সভায় উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশিষ্ট নারী নেত্রী, ইলমার প্রধান নির্বাহী ও ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারুর সভাপতিত্বে সভায় আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম সিটিকরপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ও অর্জন মহিলা উন্নয়ন সমিতির সভাপতি আবিদা আজাদ, বনফুেলর নির্বাহী পরিচালক রেজিয়া বেগম, সিএসডিএফ'র সমন্বয়কারী কামরুন নাহার শম্পা, নিকর মহিলা উন্নয়ন সমিতির সভাপতি নূরুন নাহার, নীলাম্বর মহিলা উন্নয়ন সমতির সভানেত্রী রৌশন আরা, জাগ্রত নারীর সভানেত্রী আইনুন নাহার, সমতা মহিলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভানেত্রী মোমেনা আক্তার নয়ন, সৌরিতা জাগ্রত মহিলা সমিতির সভানেত্রী সষ্ণিতা বড়য়া, স্যুট এর নির্বাহী পরিচালক জেবুন্নেছা বেগম চৌধূরী, সাহাপুর সংস্থার প্রধান নির্বাহী ফরিদা ইয়াসমিন, এসডিএফ এর সভাপতি ফেরদৌসি বেগম মৌসূমী প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে জেসমিন সুলতানা পারু বলেন, সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন এবং সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা খুবই জরুরি। তাই নারী অধিকার সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহনের জন্য ভবিষ্যতে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম গঠন করে নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।