সার সংকটের কোন সম্ভাবনা নেই; ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চাহিদা মাফিক সার দেশেই আছে-ডিজি ডিএই

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নরসিংদী জেলার প্রকল্প অবহিতকরণ সভা প্রশিক্ষণ হল, উপপরিচালকের কার্যালয়, খামারবাড়ি, নরসিংদীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো: ছাইফুল আলম।

মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সারের পর্যাপ্ত মজুদ দেশেই আছে। এপ্রিল মাসের মধ্যে পুরো অর্থবছরের সারের চালান চলে আসবে। তিনি আরও বলেন সার নিয়ে কোন ধরনের সিন্ডিকেট করা যাবে না। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডিলার নিয়োগ হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে ৩ জন করে ডিলার নিয়োগ হবে। এছাড়া ৯ টি সেল সেন্টার থাকবে। ডিলার নিয়োগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নিয়ে একটি রেজিষ্ট্রেশন কমিটি করা হবে।

তিনি আরও বলেন রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্যের বাজার বাড়াতে GAP কথাটিকে জনপ্রিয় করতে হবে। প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন ঢাকা অঞ্চলে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেকসই খাদ্য উৎপাদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলোতে চাষযোগ্য জমি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এ অবস্থায় সীমিত জমিতে অধিক ফসল ফলাতে আধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত বীজ ও কৃষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

তিনি আরও জানান এ প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে ঢাকা অঞ্চল শুধু রাজধানীর চাহিদাই মেটাবে না, বরং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বড় ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম মজুমদার জানান, প্রকল্পের আওতায় ধান, সবজি ও ফলের উন্নত জাত সরবরাহ, সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ, জৈব সার ও সমন্বিত কীটনাশক ব্যবস্থাপনা চালু করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা বাড়ানো হচ্ছে। শহর ও শহরতলীর বাড়ির আঙিনায় নিরাপদ সবজি উৎপাদনকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি জানান বিদ্যমান শস্যের নিবিড়তা ১৯৫% থেকে ৪-৫℅ বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার ফসলের উৎপাদন ৭-৮% বৃদ্ধি করা। খাদ্য ঘাটতি ১৫% থেকে কমিয়ে ১২% করা। নারী ক্ষমতায়ন, নেতৃত্ব তৈরি ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে আয়বর্ধক কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ ৩০% থেকে ন্যুনতম ৩-৪% বৃদ্ধি করা।

আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের ফলে উৎপাদন ব্যয় কমে আসবে এবং কৃষকের আয় বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় খরা-সহনশীল ও রোগ প্রতিরোধী জাতের সম্প্রসারণকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মো: আজিজল হক, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, নরসিংদী । মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোছা: শারমিন সুলতানা, সিনিয়র মনিটরিং অফিসার, ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো: ওবায়দুর রহমান মন্ডল, পরিচালক,সরেজমিন উইং, ড. মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান,অতিরিক্ত পরিচালক,প্রশাসন ও অর্থ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. মো: জাকির হোসেন,অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ঢাকা অঞ্চল।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ড. মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম মজুমদার। এছাড়া জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাগণ, উপজেলা কৃষি অফিসারগণ, বিএডিসি এর কর্মকর্তাগণ, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তাগণ সহ নরসিংদী জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ ও কৃষক প্রতিনিধিগন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।