বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় দীর্ঘ ৩৪ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদ ও একটি ইনস্টিটিউটের মধ্যে একটি অনুষদে এখনও পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করার পর গত ৩ অক্টোবর থেকে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরতে শুরু করেন।
রবিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে বিভিন্ন অনুষদের একাডেমিক সময়সূচি অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হয়।
সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছেন। কারও কাঁধে ব্যাগ, কারও হাতে বই-খাতা। সবার মুখে খুশির হাসি। দীর্ঘদিন পর শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পেরে তারা প্রাণচঞ্চল। অনেক অনুষদে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পাঠদান চলতে দেখা যায়।
কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ৩৪ দিন পর শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পেরে আমরা আনন্দিত। শ্রেণিকক্ষে বইয়ের গন্ধ পেয়ে সেশনজটের আশঙ্কা থেকেও মুক্তি মিলেছে। এখন থেকে নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা হোক এই আমাদের প্রত্যাশা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ এখনো রয়ে গেছে। গত কয়েক দিনে বহিরাগতদের সংশ্লিষ্টতায় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা আশা করি, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপে এমন ঘটনা আর ঘটবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ অক্ষুণ্ণ থাকবে।”
কৃষি অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী মো. আলিফ রিয়াদ খান বলেন, “দীর্ঘ বিরতির পর শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পেরে অনিশ্চয়তার অবসান ঘটেছে। শিক্ষাজীবনের স্থবিরতা কাটিয়ে এখন সবাইকে আরও দায়িত্বশীল ও সহনশীল হতে হবে, যাতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় থাকে। পাশাপাশি সেশনজট যাতে না হয়, সে জন্য প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “দীর্ঘ আন্দোলন ও পূজার ছুটির পর অবশেষে ক্লাস শুরু হয়েছে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য নিঃসন্দেহে এটি আনন্দের খবর। আমরা আশা করি, ক্লাসে ফেরার মধ্য দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যকার দূরত্ব ঘুচে যাবে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক ও আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে আমরা শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময়, যেকোনো প্রয়োজনে প্রশাসনের পাশে থেকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “অতীতে কী হয়েছে, আমরা আর পেছনে তাকাব না। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে ইতিবাচকভাবে আমরা সবাই এগিয়ে যাব, এটাই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমাদের লক্ষ্য হবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং আগের চেয়েও উন্নত এক বাকৃবি গড়ে তোলা।”