অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তরুনদের নেতৃত্ব দিতে হবে

সৈয়দ আবুল হাসান আজমীঃ ৫ আগষ্টের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের দৃঢচেতা মনোভাব ও পিছুটান না থাকার কারণে বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু তারও আগে থেকে যারা আন্দোলনে ছিলেন তাদের সেধরণের মনোভাব না থাকার কারনে দীর্ঘ ১৫ বছরেও আন্দোলনে সফলতা আসেনি।

বর্তমানে ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থায় অসাধু ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ সরকারি বেসরকারী কর্মকর্তারা দান-খয়রাত করে সাদা মনের মানুষ বনে যাওয়া, আবার অনেকেই সরকারি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির নেতা বনে যান। সে কারনে ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি বিরোধী দিবসে সরকারের দুর্নীতিতে নিমজ্জিত অনেক প্রতিষ্ঠানও ব্যনার নিয়ে দুদকের মানববন্ধনে হাজির হন। তাই সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তরুণ সমাজকে নেতৃত্ব দিতে হবে।

১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ইং মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে সিআরবিস্থ একটি রেষ্টুরেন্ট এ ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির পুনঃগঠন উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

বিশিষ্ট তরুণ সমাজকর্মী মোঃ সাইদুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে ও তরুণ সমাজ সংগঠক মোহাম্মদ সাজ্জাদ উদ্দীনের সঞ্চালানায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের বার্তা প্রধান ও ক্যাব চট্টগ্রামের যুগ্ন সম্পাদক আবু মোশারাফ রাসেল ও মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ক্যাব যুব কমিটির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি জনাব আবু হানিফ নোমান।

আলোচনায় অংশনেন তরুণ সমাজকর্মী নাজিম উদ্দীন চৌধুরী এনেল, ওবায়দুল হক মনি, শাহাদাত বিন আসরাফ সায়মন, আর্ন্তজাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক মাহফুজর রহমান, অধ্যাপক মোকতার আহমদ, হাফেজ আমানউল্লাহ দৌলত, প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইমরান, সাজেদুল আলম মিল্টন, লায়ন ফারুক, আবদুল্লাহ আল মামুন, আব্দুন নূর, নরেন সাহা, স্বপ্না জিমি, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির মোঃ তৈয়ব ও এডভোকেট শফি, চকরিয়া-পেকুয়া ছাত্র ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সৈয়দ কবির প্রমুখ।

সভায় বক্তাগন আরও বলেন, ভোক্তা হিসাবে প্রতিটি নাগরিক সচেতন ও দায়িত্ববান হলেই অসাধু ব্যবসায়ীদের অপকর্ম ও মানুষকে জিম্মি করে অতিমুনাফাসহ খাদ্যে ভেজালের মতো জনস্বাস্থের হুমকির বিষয়গুলো রোধ করা সম্ভব। চট্টগ্রামে যিনি ব্যবসায়ী ঢাকায় গিয়ে তিনি ভোক্তা। আবার অনেকে একটি পণ্য বা সেবার ব্যবসা করলেও অন্য দশটি পণ্য ও সেবার জন্য গ্রাহক হলেও ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার জন্য মরিয়া উঠে মানুষের জীবন ও জীবিকাকে হুমকি মুখে ফেলে দিচ্ছে। সরকারের হুমকি-ধামকি, আইনকেও তোয়াক্কা করছেন না। আর ভোক্তারা সবকছিুর দায় ছেড়ে দিয়েছেন সরকারের ওপর। অথচ তাদেরও যে করনীয় আছে সে বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।

বক্তাগন আরও বলেন, খোলা সয়াবিন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক, চিনি, প্লাস্টিকসহ অনেকগুলো পণ্যই বর্জন করার কথা বলা হলেও সরকারী-বেসরকারী অনেক উদ্যোগেও সেখানে ব্যবসায়ীদের সায় নেই। তারা শুধু মুনাফা আর মুনাফা করে জিকির করে যাচ্ছেন আর জনস্বাস্থ্য ও জীবন জীবিকাকে বিষময় করে তুলছেন। আবার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও সরকারী-বেসরকারী ভাবে দান-খয়রাত করে দানবীর ও সাদা মনের মানুষ সেজে পুরো সমাজকে কুলষিত করছেন। অপকর্মকে ঢাকার জন্য অনেক পত্রিকা ও মিডিয়ার মালিক বনে যাচ্ছেন।

সমাজের এই অধঃপতনরোধে তরুণদেরকে আবারো আরও একটি সংগ্রামের নেতৃত্ব প্রদানের বিকল্প নাই বলে মত প্রকাশ করে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থান ও মহান স্বাধীনতার অর্জনকে প্রকৃত অর্থে সফল করতে হলে সমাজ থেকে এই কুলষিত অধ্যায়কে বিদায় জানাতে হবে। চট্টগ্রামে হাজার হাজার মানবাধিকার সংগঠন থাকলেও প্রতিনিয়তই মানুষের অধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটলেও কারো কোন প্রতিবাদ ছিল না। অনেকে আবার প্রশাসন, পুলিশ ও আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনীকে মানবাধিকার পুরস্কার প্রদান করে বাহবা খুড়িয়েছেন।

সভায় জানানো হয় অতিদ্রুত পরিক্ষীত ও ত্যাগী তরুণ সমাজ পরিবর্তনকারীদের সমন্বয়ে ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির পূনঃগঠন করে পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে এবং নতুন পূনরগঠিত কমিটির নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিভাগে ক্যাবের ভোক্তা অধিকার ও শিক্ষা কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।