মুগের পাউডারী মিলডিউ রোগ ব্যবস্থাপনা

সমীরণ বিশ্বাস: মুগের পাউডারী মিলডিউ রোগ একটি ছত্রাকজনিত রোগ যা গাছের পাতা, কান্ড এবং ফলের উপর একটি সাদা পাউডার পদার্থ তৈরি করে। এই রোগের কারণে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং ফলন কমে যায়। বাংলাদেশে ভাতের পরেই ২য় প্রধান খাবার হিসেবে ডালকে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর নিকট ডাল আমিষের অন্যতম প্রধান যোগানদাতা। তবে তথ্য অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের গড়ে প্রতিদিন ৪৫ গ্রাম করে ডাল খাওয়ার প্রয়োজন, কিন্তু আমরা খাচ্ছি মাত্র ১২-১৫ গ্রাম। ডাল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এই ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে। বাংলাদেশের ডালজাতীয় ফসলের মধ্যে মসুর, মুগ,  মাসকলাই, ছোলা ও  মটরই মূলত প্রধান।

তবে পুষ্টির দিক থেকে মুগডালকে সেরা বিবেচনা করা হয়। মুগডাল চাষ করে কৃষক একদিকে যেমন পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারবে, অন্য দিকে বাজারে বিক্রি করে আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হতে পারবে। মাত্র দুই বা আড়াই মাসে ফসল পাওয়ায় কৃষক সহজেই আমন ধান কাটার পর পতিত জমি মুগডালের মাধ্যমে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারে।

লক্ষণঃ

  • পাতা, কান্ড ও ফল আক্রান্ত হয়।
  • আক্রান্ত পাতা, কান্ড ও ফলে সাদা পাউডারের মত আবরণ পড়ে।
  • প্রথমে পাতার উপর পৃষ্ঠে ছোট ছোট সাদা হালকা পাউডারী দাগ দেখা যায়।
  • পরবর্তীতে ধূসর সাদা রং ধারণ করে। ধীরে ধীরে এ সাদা পাউডারের মত দাগ সমস্ত পাতা, কান্ড, ফুল ও ফলে বিস্তার লাভ করে।
  • আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে হালকা নীল থেকে ধূসর বর্ণের দাগ পরিলক্ষিত হয়।
  • এ রোগের আক্রমণ বেশী হলে সমস্ত গাছ আক্রান্ত হয় ও মারা যায়।
  • বীজ, পরিত্যক্ত গাছের অংশ ও বায়ুর মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনাঃ

  • আগাম বীজ বপন করা।
  • সুষম সার প্রয়োগ করা।
  • পরিমিত সেচ প্রদান।
  • রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যাবহার করা।
  • আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট বা পুড়ে ফেলা।

রাসায়নিক দমন ব্যবস্থাপনাঃ

  • রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে  হাদিয়াভিট ( সালফার গ্রুপর) ২ গ্রাম মিশিয়ে ১২-১৫ দিন অন্তর  ‍স্প্রে করা।

লেখক: কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ , ঢাকা।