এমডব্লিউসি ২০২৫-এ এআই ও ইকো-টেক উদ্ভাবন দেখালো ইনফিনিক্স

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:তরুণদের জনপ্রিয় প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স এমডাব্লিউসি ২০২৫-এর শো স্টপার ইভেন্টে উদ্ভাবনী সব প্রযুক্তির প্রদর্শনের মাধ্যমে ভবিষ্যতের প্রযুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি আরও শক্তিশালী করেছে। 'এআই, ইকো-টেক ও নিজস্ব উদ্ভাবনের মাধ্যমে আগামীর ক্ষমতায়ন'—এই দর্শনকে সামনে রেখে ইনফিনিক্স দুটি নতুন উদ্ভাবন সবার সামনে এনেছে। উদ্ভাবনগুলো হলো- সোলার এনার্জি-রিজার্ভিং টেকনোলজি বা পরিবেশের আলো ব্যবহার করে ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ানো ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ফোনের ডিজাইন কাস্টমাইজ করার একটি অত্যাধুনিক ফিচার।

টেকসই শক্তির নতুন দিগন্ত: সোলার এনার্জি রিজার্ভিং টেকনোলজি

ইনফিনিক্সের সোলার এনার্জি রিজার্ভিং টেকনোলজি টেকসই ও কার্যকর শক্তি ব্যবস্থাপনায় সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। উন্নত পেরোভস্কাইট ফটোভোলটাইক প্রযুক্তি ও বুদ্ধিমান এআই অ্যালগরিদমের সমন্বয়ে এটি আলোকে শক্তিতে রূপান্তর করে যা চার্জিং পদ্ধতিকে আরও কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব করে তোলে।

এই কনসেপ্ট প্রযুক্তিটি ঘরের ভেতর ও বাহির দুই জায়গার আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করে প্রোটটাইপ স্মার্টফোনের ফোন কেসে সংরক্ষণ করে। ফোন কেসটির ভেতরে থাকা সংযোগ পয়েন্টের মাধ্যমে সংরক্ষিত শক্তি স্মার্টফোনে স্থানান্তরিত হয় ফলে চার্জিং প্রক্রিয়া হয় আরও নির্বিঘ্ন।

এছাড়া, এআই-চালিত "সানফ্লাওয়ার" ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি এই উদ্ভাবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সূর্যমুখী গাছের মতো এই প্রযুক্তি আলোর প্রতি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে যাতে সর্বোচ্চ পরিমাণে আলো গ্রহণ করা যায়। স্মার্ট আলোকসংবেদী সেন্সর ও এআই-নিয়ন্ত্রিত চার্জিং প্রযুক্তির সাহায্যে এটি ৩ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে সর্বোত্তম চার্জিং নিশ্চিত করতে পারে। ভবিষ্যতে এটি আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই প্রযুক্তিগুলোর সম্মেলনে ইনফিনিক্স একটি টেকসই, নিরাপদ ও গতিশীল শক্তি ব্যবস্থা তৈরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য দিচ্ছে -

দীর্ঘস্থায়ী স্ট্যান্ডবাই পাওয়ার - সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনডোর ও আউটডোর আলোর শক্তি সংগ্রহ করে ব্যাটারির ব্যাকআপ ক্ষমতা বাড়ায়।

এআই-চালিত শক্তি ব্যবস্থাপনা - ম্যাক্সিমাম পাওয়ার পয়েন্ট ট্র্যাকিং (এমপিপিটি) প্রযুক্তির মাধ্যমে এআই ভোল্টেজ ও কারেন্ট নিয়ন্ত্রণ করে ফলে অতিরিক্ত গরম হওয়া বা ব্যাটারির স্থায়িত্ব কমার সম্ভাবনা থাকে না।

জরুরি পাওয়ার ব্যাকআপ - যেকোনো বিপর্যয় বা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় ইনফিনিক্স-এর এআই-নিয়ন্ত্রিত ফটোভোলটাইক চার্জিং ব্যবহারকারীদের সংযুক্ত রাখবে।

স্মার্টফোনের গণ্ডি পেরিয়ে টেকসই প্রযুক্তির বিস্তার

এই প্রযুক্তি শুধু স্মার্টফোনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ নয়। ইনফিনিক্স ভবিষ্যতে ডিজিটাল ডিভাইস ও পরিধানযোগ্য প্রযুক্তিতে এটির ব্যবহার পরিকল্পনা করছে। এটি পারফর্মেন্স ও সহজলভ্যতাকে ঠিক রেখে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, নতুন কর্মক্ষমতা ও  অত্যাধুনিক ফিচারের মিশেলে একটি নতুন ভবিষ্যতের হাতছানি দিচ্ছে।                                                                      

ই-কালার শিফট ২.০

শক্তি ব্যবস্থাপনার উদ্ভাবনের পাশাপাশি ইনফিনিক্স নিয়ে এসেছে ই-কালার শিফট ২.০ নামের একটি এআই চালিত উন্নত প্রযুক্তি যা স্মার্টফোনের ডিজাইনে নিজের ব্যক্তিত্বের ছাপ আনার ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করছে।এই ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের ফোনের রঙ ও ডিজাইন পছন্দমতো পরিবর্তন করতে পারবেন। এই ফিচারটিতে বিভিন্ন বাইরের পরিবেশ ও ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুযায়ী ফোনের রঙ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন হবে।

কাস্টোমাইজড মডেল- ৬টি ডায়নামিক প্যাটার্ন ও ৬টি উজ্জ্বল রঙের প্যালেট থেকে বেছে নেওয়ার সুযোগ, যা মিলিয়ে ৩০টি ভিন্ন কম্বিনেশন তৈরি করা যাবে।

এআই রেকগনাইজড মডেল- সেন্সরের মাধ্যমে ফোনের ব্যাক কভার পরিবর্তিত হবে আবহাওয়া, ওয়ালপেপার ও চারপাশের পরিবেশ অনুযায়ী, যা ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নির্বিঘ্ন রঙ পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা তৈরি করবে।

উন্নত কালার ডেপথ ও সেগমেন্টেশন প্রযুক্তির মাধ্যমে ই-কালার শিফট ২.০ এআই-চালিত স্মার্টফোন কাস্টমাইজেশনের মূলধারার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।

যদিও এই প্রযুক্তিগুলো বর্তমানে কনসেপ্ট পর্যায়ে রয়েছে তবে ইনফিনিক্সের লক্ষ্য একটি বুদ্ধিমান, টেকসই ও নিজের পছন্দমতো স্মার্টফোন অভিজ্ঞতা তৈরি করা।

সোলার এনার্জি রিজার্ভিং টেকনোলজির মাধ্যমে ইনফিনিক্স মোবাইল চার্জিং-এর ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করছে। এই প্রযুক্তির প্রথম প্রয়োগ হতে যাচ্ছে ইনফিনিক্স নোট ৫০ সিরিজে, যা ২০২৫ সালের মার্চের শেষ দিকে বাজারে আসবে। নতুন নোট ৫০-এ থাকবে উন্নত চার্জিং সুবিধা, নেক্সট জেনারেশন ফিচার ও প্রিমিয়াম মেটাল ডিজাইন। শীঘ্রই বাজারে আসতে যাওয়া এই স্মার্টফোনটি হতে যাচ্ছে একটি সত্যিকারের ফ্ল্যাগশিপ ফোন।