মিজানুর রহমান: গবাদিপশুর জাতের মানোন্নয়ন, দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃত্রিম প্রজননের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ), বগুড়ায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মাঠ পর্যায়ের বাস্তব সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) “কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে জাত উন্নয়নে সমস্যা ও করণীয়” শীর্ষক দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে আরডিএ। একাডেমির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরডিএ'র মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. এ. কে. এম. অলি উল্যা।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, “কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কৃত্রিম প্রজনন একটি যুগান্তকারী প্রযুক্তি। তবে এটি যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, সেজন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানবসম্পদ, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো প্রয়োজন। জাত উন্নয়নের এ কার্যক্রমে সফলতা পেতে হলে সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন আরডিএ'র পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ ফেরদৌস হোসেন খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃত্রিম প্রজনন দপ্তরের পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহজামান খান। স্বাগত বক্তব্য দেন আরডিএ'র যুগ্মপরিচালক মোঃ খালিদ আওরংগজেব।
ক্যাটেল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (সিআরডিসি) কার্যক্রম তুলে ধরেন আরডিএ'র উপপরিচালক ও এআই ল্যাব ইনচার্জ ড. মাশরুফা তানজীন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (পরিসংখ্যান) ড. মোঃ সফিকুর রহমান (শশী)।
কর্মশালায় আরও আলোচনায় অংশ নেন বগুড়া জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. মোঃ জহুরুল ইসলাম, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আনিছুর রহমান, শাজাহানপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ হাসান, শেরপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ নিয়ায কাযমীর রহমানসহ বিভিন্ন উপজেলার কর্মকর্তারা।
দিনব্যাপী কর্মশালায় কৃত্রিম প্রজননের বর্তমান চিত্র, প্রযুক্তির ব্যবহার, মাঠ পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা কৃত্রিম প্রজননের মানোন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত উপকরণ সরবরাহ, প্রযুক্তিগত হালনাগাদ এবং মাঠপর্যায়ে তথ্যভিত্তিক কার্যক্রম জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
গবেষকরা বক্তারা বলেন, “গবাদিপশুর উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কৃত্রিম প্রজননের সুযোগকে আরও কার্যকর করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে নানা ধরনের সমস্যার কারণে এই প্রযুক্তির সুফল পুরোপুরি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে বাস্তবভিত্তিক ও যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এ ধরনের কর্মশালা কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমের মানোন্নয়ন এবং মাঠ পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন সংশ্লিষ্টরা।