সবজি ও ফলের মাছি পোকা দমন ব্যবস্থাপনা

সমীরণ বিশ্বাস  মিষ্টি কুমড়ার ,লাউ , ঝিঙ্গা ,চিচিঙ্গা, পটল, বেগুন এবং ফলের মাছি পোকা দমন ব্যবস্থাপনা। মাছি পোকা কুমড়া ফসলের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর। সব কুমড়া ফসলের মাছি পোকা দমনে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা যায়। এ জন্য এ ফাঁদ স্থাপনের নিয়ম-কানুন জানাটা জরুরি। আসুন জেনে নেই কিভাবে কুমড়া সহ সবজি ও ফলের মাছি পোকা দমন করবেন-

লক্ষণঃ

স্ত্রী মাছি কচি ফলের নিচের দিকে ওভিপজিটর ঢুকিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার স্থান থেকে পানির মত তরল পদার্থ বেড়িয়ে আসে যা শুকিয়ে বাদামী রং ধারন করে। ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ফলের শাস খেতে শুরু করে এবং ফল বিকৃত হয়ে যায় এবং হলুদ হয়ে পঁচে ঝড়ে যায়।

জৈব দমন ব্যবস্থাপনা:

১। আক্রান্ত ফল বা ফুল সংগ্রহ করে ধ্বংস করা বা পুড়ে ফেলা।

২। কচি ফল কাগজ বা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেয়া ।

৩। প্রথম ফুল আসা মাত্র কুমড়া জাতীয় ফসলের ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন করা। প্রতি ১০ শতাংশের জন্য ৩ টি হারে ।

৪। উত্তম রুপে জমি চাষ দিয়ে পোকার পুত্তলি পাখিদের খাবার সুযোগ করে দিন।

৫। ফেরোমন ফাঁদ: এ পোকা দমনে ফেরোমন ফাঁদ খুব ভালো কাজ করে। প্রতি ৪-৫ শতকে একটি ফেরোমন ফাঁদ যথেষ্ঠ। তবে ফেরোমন ফাঁদের পানি নিয়মিত বদলাতে হবে। মৃত পোকা পরিষ্কার করতে হবে। একটি ফেরোমন লিউর ২ মাস কাজ করে। ফেরোমন ফাঁদ গাছের ক্যানপি লেভেল থেকে ১ ফুট উপরে বাঁশের খুঁটি দিয়ে বাঁধতে হবে।

৬। জৈব বালাইনাশক হিসেবে আপনারা বায়োবিটিকে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া গাছ এবং ফল চকচকে এবং সুন্দর রাখার জন্য বায়োডার্মা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন

রাসায়নিক দমন ব্যবস্থাপনা:

১। পাকা মিষ্টি কুমড়া বা কুমড়া জাতীয় ফল ১০০ গ্রাম কুচি কুচি করে কেটে তাতে সামান্য বিষ ( যেমন- কার্বারিক এর জেনেভিন ০.২৫ গ্রাম ) মিশিয়ে তা দিয়ে বিষটোপ তৈরী করে মাটির পাত্রে করে ক্ষেতের মাঝে মাঝে স্থাপন করা।

২। সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ইরদি ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

৩। আম বা খেজুরের রসে সামান্য বিষ (কার্বারিক এর জেনেভিন ০.২৫ গ্রাম) মিশিয়ে তা বোতলে রেখে জানালা কেটে দিয়ে ক্ষেতের মাঝে মাঝে স্থাপন করা।

সাবধানতাঃ

১, স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না।

২, বালাইনাশক ব্যবহারের আগে বালাইনাশকের গায়ে আটা লেবেল ভালভাবে পড়ুন।

৩, সকল বালাইনাশকই বিষ। তাই বালাইনাশক ব্যবহারের পূর্বে এবং সংরক্ষণের সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করুন।

৪, অতিরিক্ত মাত্রায় বালাইনাশক ব্যবহার স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

৫, সুরক্ষামূলক পোশাক পরা

লেখক:  সমীরণ বিশ্বাস , কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা।