জলবায়ু-সহনশীল মাছচাষ উন্নয়নে বাকৃবিতে গবেষণা কর্মশালা

বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) “বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ মিঠাপানি ও সামুদ্রিক মাছের জন্য জলবায়ু-সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন” শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ইউজিসি ও বিশ্বব্যাংক সমর্থিত হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং (হিট) প্রকল্পের অর্থায়নে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাড়তি তাপমাত্রা, লবণাক্ততা ও চরম আবহাওয়ার প্রভাব মোকাবিলা করে অভিযোজিত, টেকসই ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন। এই প্রকল্পের প্রধান হিসেবে আছেন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান, তাঁর পাশাপাশি সহকারী হিসেবে আছেন ড. মো. আল ইমরান, এবং সদস্য হিসেবে আছেন অধ্যাপক ড. সালেহা খান।

কর্মশালায় ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. কাইজার আহমেদের সুমনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক ও ইউজিসি-এটিএফ সেক্রেটারিয়েটের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দিন ভূঞা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড সালেহা খান। কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, পিএইচডি এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

প্রকল্পের প্রধান পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহজাহান বলেন, বর্তমানে স্বাদুপানির মাছচাষ, বিশেষ করে তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লাভজনকতা হারাচ্ছে। যেখানে প্রতি কেজি মাছ উৎপাদনে ১০০ টাকা খরচ হয়, কৃষকরা নামমাত্র মুনাফা পান। তাই বিকল্প হিসেবে আমরা সামুদ্রিক ভেটকি মাছকে রিসার্কুলেটরি অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেমে (আরএএস) অভিযোজিত করার কাজ করছি।যদি ভেটকি মাছ সফলভাবে আরএএস প্রযুক্তিতে উৎপাদন সম্ভব হয়, তবে প্রতি কেজি উৎপাদন খরচ ২০০ টাকা হলেও বাজারদর ৬০০ টাকা। ফলে কৃষকরা কেজিপ্রতি প্রায় ৪০০ টাকা লাভ পাবে। যা বর্তমান স্বাদুপানির মাছচাষের তুলনায় বহুগুণ বেশি লাভজনক। ইতোমধ্যে ছোট স্কেলে মডেলটি সফল হয়েছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ‘খাঁচায় চাষ’ ও আরএএস সিস্টেমে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চলছে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মাছচাষ পদ্ধতিতে ব্যাপক উন্নয়ন আনা জরুরি। কোন প্রযুক্তি ও কোন ধরনের ফিশ-কালচার মডেল ভবিষ্যতের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে তা এই প্রকল্পে সুস্পষ্টভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমি চাই, প্রকল্পে স্নাতক পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হোক, যাতে তারা হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে এবং গবেষণায় আগ্রহী হয়ে ওঠে।