
এগ্রিলাইফ প্রতিবেদক: মাছের আচরণই এখন স্মার্ট ফার্মিংয়ের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ডেটা সোর্স। প্রচলিত ধারণায় মাছের দ্রুত সাঁতার কাটা, হঠাৎ দিক পরিবর্তন বা পানির উপরে উঠে আসাকে অনেক চাষি “খেলাধুলা” মনে করলেও, বাস্তবে এগুলোই মাছের স্ট্রেস, অক্সিজেনের ঘাটতি (DO-drop), গিল ইনফ্লেমেশন বা পানিতে টক্সিসিটির প্রাথমিক সংকেত।
কৃষিবিদ গোলাম সারোয়ার, এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (অ্যাকুয়া), আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লি. বলেন, “মাছ শব্দ দিয়ে নয়, আচরণ দিয়েই ডেটা পাঠায়। Erratic Swimming কোনো সাধারণ অ্যাকটিভিটি নয়, এটি পুকুরের সবচেয়ে প্রাথমিক সতর্কবার্তা।”
তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্মের স্মার্ট ফার্মিং কেবলমাত্র পানির প্যারামিটার মাপার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মাছের আচরণ-প্যাটার্ন বিশ্লেষণের উপর নির্ভরশীল। কারণ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত, পানির মানের পরিবর্তন (যেমন pH, DO, অ্যামোনিয়া) পরে ঘটে, কিন্তু মাছের আচরণ পরিবর্তন হয় সবার আগে। তাই যে চাষি মাছের আচরণ আগেভাগে বুঝতে পারে, সে অক্সিজেনের পতন, অ্যামোনিয়ার লোডিং বা টক্সিক ক্রাইসিসের আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে।
কৃষিবিদ গোলাম সারোয়ার এর মতে, বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে বিহেভিয়ার-ভিত্তিক সেন্সর, AI ক্যামেরা ও মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে মাছের গতিবিধি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এসব প্রযুক্তি মাছের সাঁতারের গতি, দিক পরিবর্তন, খাওয়ার ধরন ও পানির স্তরে অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে রিয়েল-টাইম অ্যালার্ট দেয়। বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ বাড়ছে, যা চাষিদের জন্য একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা।
আচরণ-ভিত্তিক ডেটা ব্যবহারের মাধ্যমে চাষিরা শুধু মাছের মৃত্যু রোধ করতে পারছেন না, বরং ফিড কনভার্সন রেশিও (FCR) উন্নত করছেন, উৎপাদন খরচ কমাচ্ছেন এবং পুরো ফার্মিং সাইকেলকে আরও টেকসই ও লাভজনক করে তুলছেন বলেন কৃষিবিদ গোলাম সারোয়ার।
মাছের আচরণই পুকুরের প্রথম ভাষা এই ভাষা বুঝতে পারলেই চাষি সময়মতো পদক্ষেপ নিতে পারে, সাইকেল বাঁচাতে পারে এবং ফার্মকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে পারে।
Future Farming = Behaviour First. Observe Early. Act Early. Save the Cycle. অর্থাৎ “চাষি ও মাছের Eye Contact = রিয়েল-টাইম মনিটরিং = সুরক্ষিত সাইকেল”
























