সমীরণ বিশ্বাস: এটি পাতাপোড়া বা ঝলসানো রোগ নামেও পরিচিত। পাতাপোড়া রোগের ব্যাকটেরিয়া জীবাণু (ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট ) আক্রান্ত- গাছ বা তার পরিত্যক্ত গোড়া, কুটা ও বীজ এবং আগাছার মধ্যেও থাকতে পারে। শিশির, সেচের পানি, বৃষ্টি, বন্যা এবং ঝড়ো হাওয়ার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। পাতা পোড়া রোগ পোকা, বাতাস এবং সেচের পানির মাধ্যমে এক জমি থেকে অন্য জমিতে. ছড়ায়। গাছের ক্ষত স্থান দিয়ে এ রোগের জীবাণু ভিতরে প্রবেশ করে। আসন্ন রোরো তথা শীত মৌসুমে ধান এবং সবজি খেতে এই রোগটি কৃষকের অত্যন্ত চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আশা করি এই লেখাটি কৃষক ভাইদের উপরোক্ত রোগ ব্যবস্থাপনায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে
বিভিন্ন ফসলে এরোগ হয়ে থাকে ;
যেমন : কুমড়ো জাতীয় ফসল, শিম জাতীয় ফসল, ধান ফসল, এছাড়া মরিচ, টমেটো, বেগুন, পাতাকপি, ফুলকপিতেও পাতাপোড়া রোগ দেখা যায়।
রোগের লক্ষন:
১, আক্রান্ত পাতায় ছোট ছোট গোলাকার হতে কোনাচে বাদমী রংয়ের দাগ পড়ে।
২, দাগের কেন্দ্র ধুসর রংয়ের কিনারা লালচে হতে বাদামী রংয়ের হয়।
৩, দাগগুলি একত্রে বড় আকারের হয় (১ সেঃ মিঃ)
৪, এমন কি গাছের শাখা প্রশাখা ও সীমেও দাগ পড়ে।
৫, পরবর্তীতে পাতায় ও ফলে বাদামী দাগ দেখা যায় ।
জৈব রোগ প্রতিরোধে ও প্রতিকারে করনীয়:
১, প্রতিরোধী জাত / বীজ ব্যবহার করা
২, রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা।
৩, আক্রান্ত ফল,পাতা ও ডগা অপসারণ করা।
৪, অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার বন্ধ করা
৫, সুষম মাত্রায় পটাশ এবং দস্তা সার ব্যবহার করা
৬, ক্ষেতের পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা করা
৭, রোগের শুরুতেই আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে পুরে ফেলা।
৮, ফসল চাষে শষ্য পর্যায় অবলম্বন করা
রাসায়নিক রোগ প্রতিকারে করনীয়:
১, সালফার গ্রুপের ছত্রাকনাশক (হাদিয়াভিট)-৬০ গ্রাম, পটাশ-৬০ গ্রাম, দস্তা- ২০ গ্রাম, ১০ লিটার পানিতে মিশায়ে ৬ -১০ শতক জমিতে স্প্রে করুন।
২, ফসলভেদে এ রোগের ব্যবস্থাপনা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। প্রয়োজনে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
লেখক: সমীরণ বিশ্বাস, কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ