রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে নবান্ন উৎসব

মো: এমদাদুল হক: গতকাল ১৬ নভেম্বর রোজ রবিবার একাধিকবার জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত রাজশাহী শহরের মহিষবাথান এলাকার কৃষক মনিরুজ্জামান মনিরের উদ্যোগে চৈতন্যপুর গ্রামের নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী চৈতন্যপুর গ্রামের আবহমান এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রামে আয়োজন করেছেন নবান্ন উৎসবের। পয়লা অগ্রহায়ণে গ্রামের সবাইকে নিয়ে তিনি আয়োজন করেন বাঙালি ঐতিহ্যের এই উৎসবের।

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে চৈতন্যপুর গ্রামে সকাল থেকে বিশেষ আনন্দ আমেজ বিরাজ করে। এই দিনে এই গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পিঠাপুলি, পায়েস আর বিশেষ রান্না করা হয়। উৎসব উপলক্ষে আগে থেকে গ্রামের কিশোরীরা নাচ গানের অনুশীলন করে রাখে এবং কিশোরীরা নৃত্য গান পরিবেশন করে। নবান্ন উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিকেলে ধান কাটার প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা দেখতে আশেপাশের গ্রাম থেকে ছোট নানা শ্রেনী এসে ভিড় জমান। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে জাতীয় সংগীত উপস্থিত সকলে সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হয়। এর পর শুরু হয় ধান কাটার প্রতিযোগিতা, প্রতিযোগিতায় তিনটি দল অংশগ্রহন করে প্রতিটি দলে তিন জন করে ধান কাটার জন্য অংশগ্রহন করে।

প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় ওরিনা লাকড়ার দল। ওরিনার সঙ্গে ছিলেন বিমলা বেগ ও স্বপ্না লাকড়া। টানা পাঁচ বছর ধরেই প্রথম হচ্ছে তাঁর দল। অনুষ্ঠান শেষে প্রথম হওয়া তিন নারীকে পুরস্কার দেওয়া হয়। অংশগ্রহনকারী অন্য দুই দলকেও পুরস্কার দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় নবান্নের উৎসব উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মেহেরুন নেসা, উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মমিনুল ইসলাম ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার, মোছা: ফরিদা ইয়াছমিন।

অনুষ্ঠানের আয়োজক মনিরুজ্জামান জানান, কর্মব্যস্ত প্রতিটা দিনের মাঝে একটা দিন সবাইকে একটু বিনোদন দিতেই এই আয়োজন। আমি মনে করি যে একজন কৃষক সারা বছরই সমস্যায় থাকেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে চাষাবাদ করেও তাঁরা ভালো লাভ করতে পারেন না। তাঁদের প্রতিকূল সময়ের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। তাই বছরের একটা দিন নির্মল আনন্দ দিতেই আমি এ আয়োজন করছি। সাত বছর ধরে চৈতন্যপুর গ্রামে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করে আসছি। আমি যতদিন থাকব ততদিন এই আয়োজন করবেন বলেও তিনি জানান।