হাইব্রিড সবজি বীজ উৎপাদনে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সার্কের আহ্বান

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:দক্ষিণ এশিয়ার সবজি বীজ খাতে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সার্ক কৃষি কেন্দ্র (এসএসি) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ কর্মশালা “সার্ক সদস্য দেশসমূহে সবজি ফসলের হাইব্রিড বীজ উৎপাদনে সাম্প্রতিক অগ্রগতি” সোমবার (২৪ নভেম্বর ২০২৫) উদ্বোধন করা হয়। প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো সদস্য দেশগুলোর অংশগ্রহণকারীদের হাইব্রিড সবজি বীজ উৎপাদনে ব্যবহৃত সর্বশেষ কৌশল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা। সার্কের বিভিন্ন দেশ থেকে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা এতে অংশ নিচ্ছেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক ড. মো. হারুনূর রশীদ বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইব্রিড বীজ প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিক উৎপাদনশীলতা বাড়াতে গবেষণার সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানসম্মত বীজ উৎপাদন এবং জলবায়ু-সহনশীল প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরও বলেন, সহযোগিতা বৃদ্ধি, জ্ঞান বিনিময় এবং সক্ষমতা উন্নয়নই উচ্চমানের, জলবায়ু-সহনশীল হাইব্রিড সবজি বীজ উৎপাদনকে আরও শক্তিশালী করবে।

প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ও কারিগরি সেশনসমূহ উপস্থাপন করে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের সিনিয়র কর্মসূচি বিশেষজ্ঞ (ফসল) ড. সিকান্দার খান তানভীর জানান, বিভিন্ন সবজি ফসলের হাইব্রিডায়ন পদ্ধতি, প্রক্রিয়াজাতকরণ কৌশল এবং বীজ বিপণনসহ গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি বিষয়গুলো এ প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা সদস্য দেশগুলোর বীজ উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের কৃষি গবেষণা পরিষদের (আইসিএআর) অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. সুধাকর পাণ্ডে। তিনি বলেন, হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ফলন বৃদ্ধি, গুণগত মান উন্নয়ন এবং রোগ–পোকার আক্রমণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবজি উৎপাদন বৃদ্ধিতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর তিনিও গুরুত্ব দেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (এআরডি ও এসডিএফ) তানভীর আহমেদ তরফদার বলেন, পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে সদস্য দেশগুলো যখন সবজি উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য গুরুত্ব দিচ্ছে, তখন এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সময়োপযোগী। তিনি বলেন, অভিজ্ঞতা বিনিময়, দেশভিত্তিক উপস্থাপনা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা হাইব্রিড বীজ উন্নয়ন ও বাণিজ্যিকীকরণে আরও গতি আনবে।

প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) ড. মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, হাইব্রিড সবজি বীজ ফলন, গুণগত মান এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধির অন্যতম কার্যকর মাধ্যম। তবে মানসম্মত বীজের সীমিত প্রাপ্যতা, জলবায়ুগত চাপ এবং প্রশিক্ষিত জনবলের ঘাটতি এখনও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

সেশনে অংশগ্রহণকারীরা অঞ্চলের হাইব্রিড সবজি বীজে আমদানি-নির্ভরতা, গবেষণা–প্রসার (এক্সটেনশন) ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং বীজ সার্টিফিকেশন ও কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষজ্ঞরা যৌথ গবেষণা, জার্মপ্লাজম বিনিময়, সরকারি–বেসরকারি অংশীদারিত্ব এবং সমন্বিত বীজ মানদণ্ড প্রণয়নের ওপর জোর দেন, যাতে আঞ্চলিক বীজ নিরাপত্তা শক্তিশালী হয়।