প্রয়াত লাইভস্টক এসিস্ট্যান্ট জনাব শামসুল হক-এর পরিবারের পাশে এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: প্রানিসম্পদের জাত উন্নয়নে কৃত্রিম প্রজনন কর্মীদের অবদান এই জাতিকে সারাজীবন স্মরন করে রাখতে হবে। খুব বেশিদিন হয় এক/দু দশক আগেও যেখানে একটি দেশী গরু থেকে মাত্র ১ থেকে ১.৫ লিটার দুধ পেতে খামারিদের হিমসিম খেতে হতো। একটা ষাঁড় ৩থেকে ৪ বছর লালন পালন করেও ৩ থেকে ৫ মণের বেশি মাংশ পাওয়া যেতো না।তাছাড়া একটি দেশি গাভী প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে ডাকে আসতে সময় নিতো ২৪ থেকে ৩০ মাস। অথচ কৃত্রিম প্রজনন এর মাধ্যমে জাত উন্নয়ন হয়ে ২০-৩৫ লিটার এর গাভী বাংলাদেশে তৈরী হচ্ছে,পাওয়া যাচ্ছে দেড় থেকে দু টনের ষাঁড়, মাত্র ১০-১২ মাস বয়সে বকনা ডাকে আসছে।

এই আমুল পরিবর্তনের আসল সৈনিক এই কৃত্রিম প্রজনন কর্মীরাই। তাদের রাতদিন নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমেই দেশ দেখছে প্রাণিসম্পদের এ উন্নয়ন। সারাদেশে ১৮ হাজার ছোট বড় এমন প্রজনন কর্মী রয়েছেন।১৩ টি প্রতিষ্ঠান সরকারী এবং বেসরকারি পর্যায়ে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই প্রজনন কর্মীরাই একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতার কেন্দ্রবিন্দু। অথচ শুধুমাত্র এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স ই তাদের কৃত্রিম প্রজনন কর্মী বা লাইভস্টক এসিস্ট্যান্ট দের জন্য বিগত ৩ বছর যাবৎ চালু রেখেছে ফ্রি লাইফ ইন্সুইরেন্স পলিসি যা বাংলাদেশ এর কৃত্রিম প্রজনন ইতিহাসে বিরল।

এই ইন্সুরেন্স কাভারেজে সারাদেশের এসিআই-এর ৩৩০০ কর্মীর ভেতরে ১৮৫১ জন ইতিমধ্যেই ইন্সুইরেন্স কাভারেজের আওতায় রয়েছেন। এই কাভারেজে কর্মীরা চিকিৎসা বাবদ পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ৩০,০০০ টাকা, স্বাভাবিক মৃত্যুতে ২৫০,০০০ টাকা এবং এক্সিডেন্টাল মৃত্যুতে ৪০০,০০০ টাকা।

এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স-এর একজন একনিষ্ঠ কৃত্রিম প্রজনন কর্মী ছিলেন জনাব শামসুল আলম, নওগাঁ। বিগত ১ বছর আগে তিনি কৃত্রিম প্রজনন শেষ করে বাইক নিয়ে যখন ফিরছিলেন, আকস্মিক ভাবে তার মোটরসাইকেল এর নিচে চলে আসে কুকুর, তিনি পতিত হন সড়ক দুর্ঘটনায়। ভেংগে যায় তার একটি পা। সাথে সাথে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় হসপিটালে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে যান এবং প্রায় দীর্ঘ ৩ থেকে ৪ মাস তার চিকিৎসা চলে। এরপর সে চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন ঠিকই কিন্তু ভাগ্যবিধাতা তাকে নিরাশ করেন অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক এপ্লিকেশন এবং লো-ইমিউনিটিতে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন ধরা পড়ে হেপাটাইটিস-বি এবং দু:খজনকভাবে এটাই ছিলো তার শেষ রোগ এবং চিকিৎসা। চিরতরে আমাদের সকলকে কাঁদিয়ে জনাব শামসুল হক চলে যান পরপারে।

শামসুল হক-এর মৃত্যুতে তার নিজ এলাকার হাজারো খামারির চোখে পানি ঝড়েছে। তবে তাঁর রেখে যাওয়া কর্ম তাকে সারাজীবন স্মরণ করে রাখবে এমনটাই সকলের চাওয়া।

প্র‍য়াত শামসুল হক চলে যাওয়ার সময় এক স্ত্রী এবং দুই পুত্র সন্তান রেখে যান। পিতা হারিয়ে বড় সন্তান পড়ে যান আকাশ সমান বিপদে ঠিক সেই মুহুর্তে তাদের পাশে দাঁড়ায় এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স। তার বড় সন্তানকে প্রশিক্ষিত করে এসিআই লাইভস্টক এসিস্ট্যান্ট হিসেবে তার বাবার স্থলাভিষিক্ত করে কাজে নিয়োজিত করে। সবশেষ তার পরিবার ইন্সুরেন্স কাভারেজ এর ২৫০,০০০ টাকা এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স এর হাত দিয়ে গত সোমবার (২ ফেব্রুয়ারি'২০২৫)- এ বুঝে পান।

ব্যবসার পাশাপাশি এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স-এর মানবিক কর্মকান্ড সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছে। এসিআই লাইভস্টক এসিস্ট্যান্টরা এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে একার্যক্র্রম অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।