বাকৃবিতে 'নিরাপদ ও পুষ্টিকর ধান উৎপাদনের জন্য প্রজনন ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির উন্নয়ন' শীর্ষক প্রকল্পের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

দীন মোহাম্মদ দীনু,বাকৃবি: বাংলাদেশের অনেক এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি আর্সেনিক দ্বারা দূষিত। অবিরাম জলাবদ্ধতার অধীনে ধান চাষ করলে চালের মধ্যে এই বিষাক্ত উপাদানের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যেতে পারে। ৩ দিন জলাবদ্ধতা ও ৪ দিন নিষ্কাশন (3F4D) ভিত্তিক একটি পরিবর্তিত পর্যায়ক্রমিক সেচ কৌশল চালের মধ্যে অজৈব আর্সেনিকের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৬ মে ২০২৫)সকাল ১০ ঘটিকায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত 'নিরাপদ ও পুষ্টিকর ধান উৎপাদনের জন্য প্রজনন ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির উন্নয়ন' শীর্ষক প্রকল্পের আায়োজনে মৃত্তিকা বিজ্ঞান মাঠ গবেষণাগারে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে এসব তথ্য জানান প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় জাইকার কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন উল্লেখিত প্রকল্পটি চালের আর্সেনিক হ্রাসে যেমন ফলপ্রসূ, ফলনেও নেই এর কোনো কমতি।

প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক, প্রফেসর ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঁঞা,বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ অঞ্চল ,ড. সালমা লাইজু।বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. আবু জোফার মো: মোসলেহ উদ্দিন ,উপ-প্রকল্প পরিচালক, প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন সুমন,প্রকল্প সমন্বয়কারী, জাইকা, বাংলাদেশ , রিউচি কাটসুকি, মো. সোহেল রানা ,সিফাত সুলতানা পিএইচডি ফেলো, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন ,3F4D পদ্ধতিতে উৎপাদিত চালে অজৈব আর্সেনিকের মাত্রা অবিরাম জলাবদ্ধতার তুলনায় সর্বোচ্চ ৪০% পর্যন্ত কমে। তারা আরও বলেন এখানে উল্লেখযোগ্য হলো, ধানের ফলন অপরিবর্তিত থাকে। পাশাপাশি, এই পদ্ধতির মাধ্যমে সেচের জন্য ব্যবহৃত পানি ৬৫-৮০% পর্যন্ত সাশ্রয় সম্ভব বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম আরও উল্লেখ করেন, “এই গবেষণার ফলাফল প্রমাণ করে যে, সীমিত সম্পদেও কৃষকরা 3F4Dপদ্ধতি ব্যবহার করে ফলন ব্যাহত না করেই নিরাপদ চাল উৎপাদন করতে পারেন”। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঁঞা বলেন ,গবেষকদের দেয়া তথ্যমতে এই আবিষ্কার শুধু আর্সেনিকের ঝুঁকি কমাতেই নয়, বরং সেচের পানির চাহিদাও ব্যাপকভাবে হ্রাস করবে ,ফলে ভূগর্ভস্থ পানিদূষণপ্রবণ অঞ্চলে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও টেকসই ধান উৎপাদনে এটি বাস্তবভিত্তিক সমাধান হিসেবে এটি বিবেচিত হতে পারে বলে আমি প্রত্যাশা করছি ।