বাংলাদেশের কৃষি গবেষণার আধুনিকায়নে আরডিএ ও এসিআই-এর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ), বগুড়ার ক্যাম্পাসে বুধবার (১৫ জানুয়ারী) এক অনাড়াম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আরডিএ এবং এসিআই লিমিটেডের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। কৃষি খাতে উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করা এবং উন্নত প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনশীলতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াা হলো এই সমঝোতার মূল লক্ষ্য।

ড. এ. কে. এম. অলিউল্লাহ, মহাপরিচালক, আরডিএ এবং ড. এফ. এইচ. আনসারী, প্রেসিডেন্ট, এগ্রিবিজনেস, এসিআই লিমিটেড নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড. আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, আরডিএ এবং এর বিভিন্ন পর্যায়ের পরিচালক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়াও, এসিআই সীডের বিজনেস পরিচালকসহ এসিআই-এর বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিজ্ঞানীরা উপস্থিত থেকে এর তাৎপর্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন।

এই অংশীদারিত্বের অধীনে কয়েকটি প্রধান লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: উন্নত ফসলের জাত উদ্ভাবন এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃ দ্ধি; টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে রোগমুক্ত চারা তৈরি; আরডিএ এবং এসিআই-এর সমন্বয়ে উদ্ভাবনী গবেষণা পরিচালনা; ফসল প্রদর্শনীর মাধ্যমে উন্নত চাষাবাদের কৌশল প্রদর্শন; এবং উচ্চ মানের বীজ ও চারা সরবরাহের মাধ্যমে কৃষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি।

ড. এ. কে. এম. অলিউল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, এই অংশীদারিত্ব আরডিএ-এর উদ্ভাবনী গবেষণা ও কৃষি উন্নয়নের প্রচেষ্টাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এটি দেশের কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

ড. এফ. এইচ. আনসারী তার বক্তব্যে বলেন, এসিআই সবসময়ই কৃষি খাতে উদ্ভাবনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। আরডিএ-এর মতো একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এসিআই উদ্ভাবিত সবজি ফসলের জাত ইতিমধ্যে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কৃষি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, একসময় প্রাইভেট সেক্টর সরবরাহকৃত হাইব্রিড সবজি বীজের প্রায় পুরোটাই আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ করা হতো। তবে, বর্তমানে সবজি বীজের একটি উল্লেখ্যযোগ্য অংশ বিশেষ করে কুমড়া পরিবারের সবজি বীজের উল্লেখযোগ্য পরিমান স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করে সরবরাহ করা হচ্ছে যা দেশের বীজ শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল, স্বল্পজীবনকাল সম্পন্ন, রোগ-বালাই সহিষ্ণু এবং ক্লাইমেট স্মার্ট জাতের ব্যবহার বাড়ানো গেলে ফসলের উৎপাদনশীলতা আরও বাড়ানো সম্ভব। আবার স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত স্বল্প জীবনকালসম্পন্ন, উচ্চফলনশীল এবং রোগ-বালাই প্র তিরোধী জাত চাষীদেরকে সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহের মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা পূরন করা সম্ভব হবে। পাশাপশি আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্র য় করা সম্ভব।

এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বাংলাদেশের কৃষি খাতে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি বাংলাদেশের কৃষি খাতে টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনী যুক্তি ব্যবহারে একটি মাইলফলক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।