এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: সারা দেশে তীব্র তাপদাহে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পোল্ট্রি শিল্প। দিন দিন বাড়তে থাকা গরম এবং বৃষ্টিহীন আবহাওয়া পোল্ট্রি খাতে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশব্যাপী মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এই অস্বাভাবিক গরমের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবকেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞদের মতে, তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠলে মুরগির উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়, খাদ্যগ্রহণ হ্রাস পায় এবং মৃত্যুহার বাড়ে। এই পরিস্থিতিতে পোল্ট্রি ফার্মগুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
তাপদাহে পোল্ট্রি খাত রক্ষায় করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা:
- ঠাণ্ডা ও বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন: ফার্মে ভালো ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করতে হবে। অতিরিক্ত ফ্যান, এক্সস্ট ফ্যান কিংবা কুলার ব্যবহার করলে তাপ কমে এবং মুরগি স্বস্তি পায়।
- পানির সহজ প্রাপ্যতা ও ঠাণ্ডা পানি সরবরাহ:পর্যাপ্ত, পরিষ্কার এবং ঠাণ্ডা পানি নিশ্চিত করতে হবে। দিনে একাধিকবার পানির ট্যাংক পরিষ্কার করা উচিত।
- খাদ্য প্রদানের সময় পরিবর্তন: গরমের সময় দিনে খাবার কম দিয়ে সকাল ও সন্ধ্যার সময় বেশি পরিমাণে খাবার দেওয়া উচিত।
- ইলেক্ট্রোলাইট ও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট: তাপদাহে মুরগির শরীর থেকে পানি ও খনিজ লবণ দ্রুত বের হয়ে যায়। তাই পানি ও খাবারের সঙ্গে ইলেক্ট্রোলাইট, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
- ছায়া ও পানির ছিটা: ফার্মের ছাদে পানি ছিটিয়ে রাখা কিংবা আশপাশে গাছের ছায়া তৈরি করা যেতে পারে।
- ঘনত্ব কমানো: ফার্মে মুরগির ঘনত্ব কমিয়ে দিলে তাদের মধ্যে উত্তাপের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে।
পোল্ট্রি বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মোকাবেলায় পোল্ট্রি খাতে টেকসই এবং আবহাওয়া সহনশীল ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা জরুরি। এক্ষেত্রে সরকার, বেসরকারি খাত ও খামারিদের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তীব্র তাপদাহের এই সময়টিতে পোল্ট্রি খামারিদের ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।